গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা এবং সমস্যায় জর্জরিত চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। রাজস্ব আয়ের বড় উৎস এই অফিসটি অযতœ, অবহেলা, সংস্কার ও নতুন ভবনের অভাবে একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পরিত্যক্ত ভবনটিতে আতংক নিয়েই চলছে নিয়মিত অফিসের কার্যক্রম। একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও নতুন ভবনের বরাদ্দ করানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। তাছাড়া চরম ঝুঁকির মধ্যে অফিসের কাজ চললেও এবং প্রতিনিয়তই থাকতে হয় আতঙ্কে। দেশ স্বাধীনের আগে দ্বিতল বিশিষ্ট বর্তমান ভবনটি নির্মাণ করার পর মাঝেমধ্যে মেরামত ছাড়া বড় ধরণের কোন কাজ করা হয়নি। অতি গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড রুমে অল্প বৃষ্টিতেই ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়া। যার কারনে গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথিপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কর্মকতা-কর্মচারীদের কক্ষগুলোও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দোতলায় সাব-রেজিষ্ট্রারের অবস্থানের কক্ষটির ছাদেও পলেস্তর উঠে পুরোনো দিনের রডগুলো ভের হয়ে আছে। ভবনটিতে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে পলেস্তর, কখনও দলিলের উপর কখনও আসবাবপত্রের উপর আবার কখনও কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের মাথায় উপর। মোট কথা এ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আতংককে সামনে রেখে দিনের কার্যক্রম অতিবাহিত করতে হয়। যে কোন মুহূর্তে ছাদ ধসে পড়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা করছে সংশ্লিষ্টরা। কালের আবর্তে ফরিদগঞ্জ উপজেলা একটি উন্নয়নশীল উপজেলা, যার কারণে এই উপজেলায় প্রবাসী, ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তার সংখ্যা একটু বেশি। তাই উপজেলাটি বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সে কারণে এ উপজেলায় ভূমির রদ বদলও খুব বেশি হয়। কিন্তু সে তুলনায় ফরিদগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কোন রকম উন্নয়ন হয় না। ফরিদগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিস কক্ষে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না থাকার কারণে অফিস চলাকালীন সময়ে অফিস সহকারি, নকলনবিশ, পিয়ন, দলিল লেখক, জমির দাতা-গ্রতিহারা গা ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করতে হয়। এছাড়া সাব-রেজিস্টারের বিশ্রাম ও বসবাসের জন্য আবাসন ও মানসম্মত বাথরুমের কোন সুব্যবস্থা নাই বললেই চলে। এছাড়া পাঁচ লাখ মানুষের বসবাসযোগ্য ফরিদগঞ্জ উপজেলার এই সাব-রেজিস্টার অফিসে আগন্তক জমির দাতা এবং গ্রহীতাদের জন্য মানসম্মত পাবলিক টয়লেটেরও কোন সু ব্যবস্থা নেই। বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি হলেই পুরাতন ছাদের ফুটো দিয়ে বৃষ্টি পড়ে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, দলিলপত্র, ভলিয়ম বই নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া অফিসটিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো জানালা, দরজা, আসবাবপত্রগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ এ অফিস ঘরে বসেই সাব রেজিস্টার তার অফিসের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। দেশের প্রতিটি সরকারি দপ্তরগুলোতে ভবনের ব্যাপক উন্নয়ন করা হলেও ফরিদগঞ্জের এই প্রতিষ্ঠানটিতে কোনরকম উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। সাব রেজিস্টার মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, ভবনটি আরো আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নতুন ভবন করে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এবং তাদের দিকনির্দেশনা মোতাবেকই আমরা কাজ করব বলে তিনি জানান।