বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় বন্যার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। গতকাল শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নি¤œা ল প্লাবিত হতে পারে।
পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা) ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সময়ে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৬০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১০১ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ৮১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম শহরের সেতু পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে । গতকাল শনিবার সকালে নদ-নদী অববাহিকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজানের ঢলে গত দুই-তিন দিন ধরে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। এসব নদ-নদীতে জেগে ওঠা মৌসুমি চরগুলো ডুবতে শুরু করেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে বন্যার শঙ্কা করছেন নদ-নদী তীরবর্তী ও চরা লের বাসিন্দারা। সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের দ্বীপচর রলাকাটার চরের বাসিন্দা মুনির হোসেন বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে হু হু করে পানি বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ইতোমধ্যে নদের মাঝে জেগে ওঠা অস্থায়ী চরগুলো ডুবতে শুরু করেছে।’
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘পানি খুব বাড়ছে। জেগে ওঠা চরগুলা ডুবতে শুরু করেছে। এমন করে বাড়তে থাকলে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।’ জানতে চাইলে পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে বলেন, ‘উত্তরা লের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়বে। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে এসব নদ-নদীর নিঞ্চাল প্লাবিত হতে পারে।’ তবে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি নিয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি এই নির্বাহী প্রকৌশলী। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’