শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

নওগাঁয় প্রথম বিদেশী জাতের পেকিন হাঁস পালনে স্বাবলম্বী নারীরা

মোশারফ হোসেন জুয়েল নওগাঁ :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩

একদিকে স্বামীর সংসারের ঘানি অন্যদিকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের মুখ দেখছেন নওগাঁ সদর ও বদলগাছী উপজেলার নারীরা। স্বামী-সংসারের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বিদেশি জাতের পেকিন হাঁস পালন করেছেন তারা। আর তাদের সকল সহযোগিতা করেছেন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। এই প্রচেষ্টা দেখে বাড়তি আয়ের আশায় এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। হাঁসগুলো দেখতে সুন্দর ও দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি। পেকিন হাঁস মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। এটি চীনের জনপ্রিয় বানিজ্যিক জাতের হাঁস। ১৮০০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই জাতটি পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আনা হয়েছিল। গড়ে প্রতিটি হাঁস বছরে ২২০-২৫০টি ডিম দেয়। নওগাঁ সদর উপজেলার গুমারদহ গ্রামের সফল পেকিন হাঁস খামারী রেশমা ও সীমা বলেন, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী থেকে তাদেরকে ৫০টি করে মোট ১০০টি হাঁস, খাদ্য সহায়তা, মাচা নির্মানের খরচ, টিকা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন। বর্তমানে তাদের হাঁসগুলো বিক্রির উপযোগী হয়েছে। ১০০টি হাঁসের জন্য খরচ ২৪-২৫ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী ৬০-৬৫ হাজার টাকা বিক্রি হবে। পেকিন হাঁসের মাংস খুব সুস্বাদু, পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ ও নরম হওয়ায় সকল বয়সের মানুষ খেতে পারে। অন্যান্য জাতের হাঁসের তুলনায় এর রোগ-বালাই কম। তারা আরো বলেন, পেকিন জাতের হাঁস দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি অল্প সময়ে বেশি ওজন আসে। অন্য হাঁসের তুলনায় বেশি বড় হওয়ায় লাভ বেশি। তাই অনেকেই এই হাঁস পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মৌসুমীর প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: নূর হোসেন বলেন, পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সমন্বিত কৃষি ইউনিটভুক্ত প্রানিসম্পদ খাতের আওতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমি ২০২২-২৩ অর্থবছরে নওগাঁ সদর ও বদলগাছী উপজেলায় ২০টি ব্রয়লার টাইপ পেকিন জাতের হাঁস পালন প্রদর্শনী খামার স্থাপন করা হয়। এছাড়া জীবনিরাপত্তা নিশ্চিতকরনের পাশাপাশি প্রানঘাতি রোগ যেমন ডাককলেরা, ডাকপ্লেগ ইত্যাদির জন্য টিকা দেয়া হয়। এই হাঁস ৬০-৭০ দিনে গড় ওজন হয় আড়াই থেকে ৩ কেজি। তবে বানিজ্যিকভাবে সঠিক পরিচর্যায় সুষম পিলেট ফিড সরবরাহের মাধ্যমে এদের ওজন আরো বাড়ানো যায়। এই হাঁস নিবিড় ও আধা-নিবিড় দুই পদ্ধতিতে পালন করা যায়। তবে আধা-নিবিড় ও মাচা পদ্ধতিতে পালন করা উত্তম। মাচা অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে যেখানে পানি উঠে না সেখানে নির্মান করতে হবে। কাঠের বাটাম বা বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করা যেতে পারে। এ হাঁস দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় বেশি আয় করা যায়। জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মিহির উদ্দীন বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে নওগাঁয় মৌসুমি নামে একটি এনজিও পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পেকিন জাতের হাঁস পালনে বেশ সহায়তা করছে নারীদের। লাভজনক হওয়ায় যারা এই হাঁস পালনে আগ্রহ প্রকাশ করবেন তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com