রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০২ অপরাহ্ন

চালকসহ ৮ যাত্রী নিহত

বেলায়েত হোসেন লিটন, বিশেষ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩

ভাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একটি রোগীবাহী এম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় কবলিত হওয়ার পরপরই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছেন অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর থাকা ৭ যাত্রী। তবে অ্যাম্বুলেন্সের চালককে গুরুতর অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো পর সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হলে তিনি সেখানে মৃত্যু বরণ করেন। গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ, তিনজন নারী ও ২টি শিশু রয়েছে।
মৃত্যুর আগে চালক যা বললেন: ফরিদপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আগুনে পুড়ে যাওয়া সেই অ্যাম্বুলেন্সের চালককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মৃদুল মালো (২৮) নামের এই চালক মৃত্যুর আগে দাবি করেছেন, বেপরোয়া গতিতে আঁকাবাঁকাভাবে যাওয়া চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলের কারণে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এই দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়। পরে পুলিশ অ্যাম্বুলেন্স থেকে সাতজনের পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী, দুজন পুরুষ ও দুজন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম। দুর্ঘটনার পর ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক মৃদুল মালোকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল। চালকের বরাত দিয়ে ওসি এম এ জলিল বলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ভাড়া নিয়ে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় এসেছিলেন অ্যাম্বুলেন্সচালক মৃদুল মালো। ফেরার সময় ঢাকার কদমতলী থেকে তিনি ওই যাত্রীদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলেছিলেন। এরপর রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসা শেষে যাত্রীদের নিয়ে ফরিদপুরে ফিরছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক নারী, তাঁর দুই সন্তান ও বৃদ্ধ মাসহ আত্মীয়-স্বজনেরা ছিলেন বলে জানিয়েছেন চালক মৃদুল। তাঁদের বাড়ি বোয়ালমারী মহিলা কলেজ এলাকায়। এর বেশি কিছু জানাতে পারেনি ওই চালক।
দুর্ঘটনার বিষয়ে চালক মৃদুল মালো পুলিশকে জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে বেপরোয়া গতিতে আঁকাবাঁকাভাবে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেল আসতে দেখে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সেটি এক্সপ্রেসওয়ের সড়ক বিভাজকের রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তবে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণেই নাকি পেছন থেকে অন্য কোনো গাড়ির ধাক্কায় রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে কি না, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ঢাকা থেকে রোগীসহ যাত্রী নিয়ে একটি এম্বুলেন্স খুলনার দিকে যাচ্ছিল। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা-ভাঙা এক্সপ্রেসওয়ের মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় এলে এম্বুলেন্সটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়। এসময় ঘটনাস্থলেই এম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা সাত যাত্রী পুড়ে ছাই হয়ে যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস ভাঙ্গা স্টেশনের ইনচার্জ আবু জাফর বলেন, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এসময় গাড়িটি জ্বলছিল।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com