নওগাঁর মহদেবপুরে প্রধান পাকা সড়কের উপর অবৈধ হাট বসানোর দায়ে জরিমানা দেয়ার পরও সেখানে হাট বসানোর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৫ জুলাই) সকালে উপজেলা সদরের বকের মোড় থেকে শিবগঞ্জের মোড় রাস্তার প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনে থেকে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের পশ্চিম পাশ পর্যন্ত আবার অবৈধ ধানের হাট লাগানো হয়। গত বুধবার সকালে এই হাট লাগানোর ফলে ডবলওয়ে রাস্তার উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। খাদ্যমন্ত্রী এবং উপজেলা প্রশাসনের গাড়িও এ জটে পড়ে। বিকেলে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ইজারাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং সড়কের উপর হাট না বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে আদেশ অমান্য করে শনিবার আবারও হাট বসানো হলো। সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা যায়, ওই সড়কের পূর্বদিকের অংশ পুরোপুরি বন্ধ করে ধান কেনা হচ্ছে। ধান কিনছিলেন উপজেলা সদরের চালকল মালিক আব্দুল জলিলের ম্যানেজার জুয়েল হোসেন। তিনি জানান, মোবাইল কোর্টের নির্দেশনা তিনি জানতেন না। আশরাফুল ইসলামের ম্যানেজার রিফাত হোসেন জানান, তারা রাস্তার উপর নয়, বরং রাস্তার পাশে ধান কিনছেন। কিন্তু তাদের যানবাহন পুরো রাস্তা দখল করে রেখেছে কেন এর কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। একজন অভিভাবক আলী আক্কাস ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রাস্তার উপর হাট বসিয়ে রাস্তার উভয় পাশ বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে পারেন না। হাটটি সরানোর দাবি জানান তিনি। হাটের ইজারাদার আরিফুল হক জানান, গতবছর এই হাটের ডাক ছিল সর্বসাকুল্যে এক কোটি টাকারও কম। এবার ডাক হয়েছে দুই কোটি ৬৯ লাখ টাকা। কিন্তু হাটের পরিধি কমেছে। হাটের ২০ শতক জায়গায় পিঁয়াজ হাটি বন্ধ করে বিল্ডিং করা হচ্ছে। অন্যের জায়গা ভাড়া করে নিয়ে গরু হাট বসাতে হয়। এবার তিনি ক্ষতির সম্মুখিন হবেন। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তার একপাশে ধানের হাট লাগানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। মহাদেবপুর ইউনিয়ন হাটবাজার কমিটির সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল জানান, ধানের হাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য একাধিকবার উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। অচিরেই এটি স্থানান্তর করা হবে। উপজেলা হাটবাজার কমিটির সভাপতি ইউএনও আবু হাসান জানান, রাস্তার একপাশে অস্থায়ী ভিত্তিতে হাট লাগাতে পারে। তবে কোনক্রমেরই ডবলওয়ের উভয়পাশ বন্ধ করা যাবেনা। খুব শিঘ্রি এহাট স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা সদরের বরেন্দ্রের মোড়ে ফাজিলপুর মৌজায় ১৯৮৫ সালে হাট স্থানান্তরের জন্য চার বিঘা জমি কেনা হয়। এখন সে জমি প্রভাবশালিদের দখলে। সে জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে হাট স্থানান্তর করার দাবি তাদের।