গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রোপা আমন ধানের ফলন বাড়ানোর লক্ষ্যে সমলয় চাষাবাদের জন্য ট্রে-পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করেছে কৃষকরা। ভালো মানের চারা উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই প্রথম ট্রেতে বীজ বপন করছেন আমন চাষীরা। এ ব্যাপারে তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানার দিক-নির্দেশনায় উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর এলাকায় এ বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এই ব্লকে ৯৬ জন কৃষক সরকারের প্রণোদনার আওতায় এসে এই সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। এর মধ্যে নারী কৃষক রয়েছে ৪ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আমন মৌসুমে উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের বিনামূল্যে হাইব্রিড বীজসহ বিভিন্ন সহযোগীতা করছে সরকার। স্বল্প জমিতে অধিক ধান উৎপাদন করার লক্ষ্যে মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে চায় বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনায় শ্রীপুর উপজেলায় সরকারের প্রণোদনার আওতায় প্রথমবারের মতো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে আমন ধান চাষাবাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এরই মধ্যে সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় কৃষকরা নতুন মাত্রায় ট্রেতে বীজতলা তৈরি করেছেন। তারা মেশিন দিয়ে মাটিভর্তি ট্রেতে বপন করছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানবীজ। প্রায় এক মাসের মধ্যে ট্রেতে লাগানো বীজের চারাগুলো তৈরী হয়ে যাবে। এরপর ওই ৯৬ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে কৃষি বিভাগের মাধ্যমেই ধানের চারাগুলো লাগিয়ে দেয়া হবে ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে। জমির আগাছা পরিষ্কার হবে মেশিনে। ধান কাটা ও মাড়াই করে দেয়া হবে বড় হারভেষ্টর যন্ত্রের মাধ্যমে। যা সব কিছু সরকারিভাবে বিনামূল্যে কৃষকরা এই সুবিধা পাচ্ছে। সাতখামাইর ব্লকের কৃষক আব্দুল কাদির পাঠান, রিপন মন্ডল, সাখাওয়াত হোসেনসহ অন্যান্য কৃষকরা জানায়, আমন ধান চাষাবাদে আগে কখনো ট্রেতে ধানচারা আমরা করিনি। আমাদের কৃষি বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এই প্রথম আমরা ট্রেতে বীজ বপন করছি। সরকারের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা ভালো চারা ও অধিক ফলন পাবো এমন আশা করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বলেন, সনাতন পদ্ধতির চেয়ে এই পদ্ধতিতে ধান চাষে ফলন বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। ১৫ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে চারা উৎপাদন করে রোপণ করা সম্ভব। সমলয় চাষাবাদের লক্ষ্যে সাড়ে চার হাজার ট্রেতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। আশা করছি ভালো ফলাফল আসবে।