প্রথমে দুইজনের প্রেম। এই প্রেম দৈহিক মেলামেশায় গড়ায় অন্তঃসত্ত্বায়। নানান কল্পনা-জল্পনার পর ইসলামি শরিয়ত মতে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পরও স্ত্রী’র স্বীকৃতিতে স্বামীর ঘরে ঠাঁই হচ্ছেনা। পাচ্ছেন সন্তানের পিতৃপরিচয়। স্ত্রী-সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে দুই মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তানিয়া আক্তার(২৯) নামের এক জননী। সে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের তেলুনজিয়া গ্রামের জবান আলীর মেয়ে। অপরদিকে অভিযুক্ত স্বামী ইমন সরকার দুর্গাপুর পৌরসভার সাধুপাড়া এলাকার দুলাল সরকারের ছেলে। তানিয়া আক্তার জানান, আড়াই বছর আগে ইমন সরকার তার প্রথম বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে তানিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
সহ বিভিন্ন অজুহাতে ইমন তানিয়ার কাছ থেকে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর এভিডেভিডে বিবাহ করেন তারা দু‘জন। পরে ১৮ ডিসেম্বর এভিডেভিডের মাধ্যমে হিন্দুধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ইমন সরকার। এরপরে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তারা। সেখানেই দৈহিক মেলামেশায় যখন তানিয়া তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন সামাজিকভাবে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবী করলে এখনই সময় হয়নি বলে জানান ইমন সরকার। সে-সময় প্রথম স্ত্রী এবং ঘরে থাকা সন্তানের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। তানিয়ার গর্ভের সন্তানকে মেরে ফেলতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন ইমন। সে মূহুর্তে নিরুপায় হয়ে তানিয়া যখন আইনের আশ্রয় নিতে চান তখনই ইমন মামলার ভয়ে ২০২৩ সালের ০৯ ফেব্রুয়ারী ইসলামি শরিয়ত মতে ১৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পরও লোকসমাজে স্ত্রী হিসেবে তানিয়কে ও দুই মাস বয়সী ছেলে সন্তান কেও অস্বীকার করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তানিয়া আরো বলেন, আমি যখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হই তখন সামাজিকভাবে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বললে তাতে রাজি হয়নি ইমন। সে সকল ডকুমেন্টস লুকিয়ে ফেলে এবং আমাকে অস্বীকার করতে শুরু করে তখন আমি নিরুপায় হয়ে আমাদের ব্যক্তিগত কিছু ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করি। সে আমাকে ও আমার ছেলে সন্তানকে অস্বীকার করে কুৎসা রটানো সহ আমাকে ও আমার সন্তানকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইতোমধ্যে আমার বাড়িতে ডিভোর্স পত্র পাঠিয়েছে। আমার সন্তানের ভবিষ্যত কি ? এ রকম পরিস্থিতিতে আমার সন্তানের স্বীকৃতি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এবং সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তানিয়ার স্বামী ইমন সরকার মুঠোফোনে বলেন, কাগজ পত্রে সন্তানের বাবার নামের স্থানে তো আমারই নাম আছে। সে কেন অভিযোগ করেছে আমি জানি না। এখন আমার সঙ্গে তানিয়ার সম্পর্ক ভালো আছে। এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন হলো এই থানায় নতুন এসেছি। এ ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে মেয়েটি যদি আইনের সাহায্য চায়, তাহলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।