সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসে বাংলাদেশি পাটপণ্যে আগ্রহ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ১৯তম আসরে বাংলাদেশি পণ্য বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বাংলাদেশি পাট পণ্যের প্রতি বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ দেখা গেছে।
প্রতিদিনই বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আমদানিকারক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশের প্রদর্শিত পণ্যসমূহকে সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের পাট ও পাটের তৈরি পণ্যের প্রতি অনেকে দর্শনার্থী বিশেষ করে মালয়েশিয়ান ও অন্যান্য দেশের আমদানিকারকদের আগ্রহ দেখা গেছে। এ নিয়ে তারা প্যাভিলিয়নে দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, শুরুর দিন থেকেই মেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে দর্শনার্থীর ভিড়টা বেশি ছিল। বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি আগ্রহ দেখে আমাদেরও উৎসাহ অনেক বেড়ে গেছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হালাল বাণিজ্যের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হালাল বাণিজ্যে মালয়েশিয়ার অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য এবং সেকারণে এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে হালাল সেক্টরের উন্নয়ন তথা মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান অ লে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনে চার দিনব্যাপী শুরু হওয়া এ আসর চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চার দিনব্যাপী ১৯তম এ আসরে খাদ্য ও পানীয়, মডেস্ট ফ্যাশন, ই-কর্মাস, ইসলামিক ফিন্যান্স ও ফিনটেকসহ মোট ১৩টি ক্লাস্টারে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বেশ জমে উঠেছে ১৯তম এ আসরটি। বিশ্বের ১০৪০টি প্রতিষ্ঠান ১৮০০টি বুথের মাধ্যমে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। ১৯তম এ আসরে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে হালাল অর্থনীতির জন্য স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উদ্ভাবন এবং টেকসই উদ্যোগের উপর বিশেষ জোর দেবে।
এই মেলা শুধুমাত্র আসিয়ান অ লের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এখানে আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন ট্রেড কমিশন, সরকারি সংস্থা, শিল্প ও ব্যবসায়িক নেতারা অংশগ্রহণ করেছেন।
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহযোগিতায় এবং মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ৯টি বুথে মোট ১৬টি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
খাদ্য, পোশাক শিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইটি ও হস্তশিল্প এসকল ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে বোম্বে সুইটস অ্যান্ড কোং লিমিটেড, এগ্রোভার্স লিমিটেড, তাহমিনাস, পিপলস লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, কেএমআর ক্রাফট, কারুপণ্য, বন্ধন নূরস, অ্যালবাট্রস ফ্যাশন, পশরা লেদার অ্যান্ড জুট, জুটএক্স, বিদোরা ব্যাগ এবং হস্তশিল্প, টেকসলিউশন, প্রিঙ্ক, ত্রিনাস ক্লোসেট, ডাইনাস গ্ল্যামার এবং কল্পতরু এসব প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে।
মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি আয়েজিত মেলাসমূহের মধ্যে এটিতেই বড় পরিসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে। এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ১৯তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস এবং দ্য গ্লোবাল হালাল হালাল সামিট (জি এইচএ এস) ২০২৩ উদ্বোধন করেন। এ সময় মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য, শিল্পমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মেলার দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। সে সময় সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়া এক্সটারনেল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের পরিচালক এস জয়শংকর, আয়োজককারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূতালয় প্রধান ও কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদ চৈাধুরী, কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য, কাউন্সিলর (কনস্যুলার) রাসেল রানা, প্রথম সচিব (প্রেস) সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভীনসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশের পাটের তৈরি পণ্য, মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দিচ্ছেন হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ। ছবি- সংগৃহীত
এ সময় হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩য় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল পণ্য বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে হালাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, সারা বিশ্বে বর্তমানে হালাল বাণিজ্যের পরিমাণ ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার, ২০৩০ সালে বাণিজ্য বেড়ে দাঁড়াবে ৩.৬ ট্রিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ যদি এর ১০ শতাংশ বাজার ধরতে পারে তাহলে ৩৬০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে, ১ শতাংশ ধরলেও ৩৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সে লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।-জাগোনিউজ২৪.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com