ইরানে হামলা শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার জবাব দেওয়া সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। হ্যাগারির এ ঘোষণার আগে ইসরায়েলি হামলা প্রতিহত করার কথা জানায় ইরান। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলি ড্রোনগুলো আকাশেই ধ্বংস করার দাবি করে। এ–সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে দেখা গেছে। ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আমরা সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছি এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক হুমকিগুলো নস্যাৎ করে দিয়েছি। গতকাল শনিবার সামাজিকমাধ্যম এক্সে পাঠানো এক বার্তায় ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ‘ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আমরা সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছি এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক হুমকিগুলো নস্যাৎ করে দিয়েছি।’ অবশ্য হ্যাগারি হুমকি দেন, যদি ইরান পাল্টা হামলা চালায়, তবে ইসরায়েল প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হবে।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে ইরানের রাজধানী তেহরান ও পাশের কারাজ শহরে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের এ হামলার সময় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বাংকারে আশ্রয় নেন। ইসরায়েলি হামলার পর বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী তেহরানের আশপাশের আকাশসীমায় প্রতিপক্ষের লক্ষ্যবস্তু সফলভাবে ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইরানের অন্য একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, তেহরান ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত।
ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী তেহরানের আশপাশের আকাশসীমায় প্রতিপক্ষের লক্ষ্যবস্তু সফলভাবে ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া, কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইরানের অন্য একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, তেহরান ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। লেবাননেও সম্প্রতি ব্যাপক হামলা শুরু করেছে তারা।
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নিহত হওয়ার পর গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। ছয় মাসের মধ্যে ইসরায়েলে ইরানের দ্বিতীয় হামলা ছিল এটি। ওই ঘটনায় গত সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছিলেন, ইসরায়েলের ক্ষতি করার চেষ্টার জন্য শত্রুদের ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে।
ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা ‘আত্মরক্ষার মহড়া’: বাসস সূত্রে প্রকাশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার ভোররাতে বলেছে, ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা এই মাসের শুরুতে তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষার জন্য একটি মহড়া’। এই ব্যাপারে তাদের আগেই জানানো হয়েছিল। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এখবর জানায়। হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র শন স্যাভেট বলেছেন, ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোকে টার্গেট করে পরিচালিত এই হামলা হল ‘আত্মরক্ষার একটি মহড়া’এবং গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আগেই এই ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িত নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কতটা আগাম জানানো হয়েছিল তা জানাননি ওই কর্মকর্তা।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাগণ পরে পৃথক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে হামলা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।