এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন কোনো নির্দেশনা দেন না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর গণতন্ত্রের মে র নেতারা এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। এরপর গণতন্ত্র মে র নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারের নির্বাচনে ফাঁদে পা না দিয়ে খালেদা জিয়া একদম আন্দোলন চালিয়ে নিতে বলছেন। এ বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি বলেন, কে কী বলেছেন জানি না, আমাদের তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন, স্ট্যান্ডিং কমিটি আছে, সেভাবেই সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, চেয়ারপারসন অসুস্থ। তিনি কোনো দলীয় নির্দেশনা দেন না। এসবের মধ্যে টানবেন না। সংবাদ সম্মেলনের অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকার টার্গেট করে মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে শুরু করেছে : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যারা বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেন, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদেরকেই সরকার টার্গেট করে মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে শুরু করেছে।’ গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। ‘বর্তমান প্রতিহিংসাপরায়ণ, স্বেচ্ছাচারী ও কতৃর্ত্ববাদী সরকার ভিন্ন মতের মানুষের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় কারাদ- প্রদানের ধারাবাহিকতায়
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন যখন মানুষের অধিকার নিয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন এবং যখন তাদের এই কাজ বাংলাদেশের মানুষের মনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে ঠিক তখনই তাদের বানোয়াট মামলায় দু’বছর করে কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদ- প্রদান করা হলো। আদিলুর রহমান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে আসছেন এবং সরকারের মানবাধিকার হরণের ঘটনাগুলোকে দেশে-বিদেশে তুলে ধরে জনগণের পক্ষে কাজ করছেন। এ ধরনের মামলা নিঃসন্দেহে একটি অলীক কাহিনী।’’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আদিলুর রহমান খান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিন মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেন, আর এ জন্যই তারা বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় দেয়া ফরমায়েশি রায়ে প্রমাণিত হয় যে বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে। জনগণ এই রায়কে প্রত্যাখান করেছে। আদিলুর রহমান খান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিনের দু’বছর করে কারাদ- এবং অর্থদ- প্রদানের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’ অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাদের সাজা বাতিলের জোর আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘জনগণ সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। যত চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, জনগণ আর ভোটারবিহীন তামাশার নির্বাচন করতে দেবে না। সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করবে জনগণ।’