রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৮ই সেপ্টেম্বর। নির্বাচনকে সামনে রেখে পদ প্রত্যাশীরা বিভিন্নভাবে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রচারণায় তারা গাছে পেরেক ঠুকে সাঁটাচ্ছে বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন। যা দ-নীয় অপরাধ। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত মঙ্গলবার ক্যাম্পাসের গাছে পেরেক ঠুকে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো থেকে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলকে বিরত থাকতে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালায়। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। নির্দেশনার পরেও গাছগুলোতে ঝুলছে ব্যানার।
পরিবেশবিদরা বলছেন, পেরেকের আঘাতে গাছের যে জায়গাটায় ছিদ্র হয় সেই ছিদ্র দিয়ে পচা পানি, বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করার ফলে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। ফলে গাছের আয়ু কমে যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখে যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট, কাজলা গেইট, প্যারিস রোড, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেট, হলগুলোর সামনে, বিনোদপুর ও রেলস্টেশনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গগণশিরিষ, দেবদারুসহ আরো অনেক গাছে পেরেক ঠুকে ঝুলানো হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অসংখ্য সাইনবোর্ড-ব্যানার, ফেস্টুন। এদিকে, গাছে পেরেক বিদ্ধ করে সাইনবোর্ড না লাগাতে ২০০২ সালের ৭ই জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়। কিন্ত বাস্তবে সে আইন কার্যকর হয়নি। সিটি করপোরেশন আইনে ১৯৯০ এর ৯২ ধারার ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যত্রতত্র পোস্টার-ব্যানারসহ প্রচারপত্র সেঁটে দেওয়া এবং গাছে সাইনবোর্ড লাগানো দ-নীয় অপরাধ। এই আইনের আওতায় ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও আছে। সাইনবোর্ড সাঁটানোর বিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটা জানতাম না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি সাইনবোর্ডগুলো দ্রুত তোলার ব্যবস্থা করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম কবির বলেন, গাছে পেরেক ঠুকানো একদম ঠিক না। পেরেক ঠুকানোর ফলে গাছ ব্যথা পায়। গাছ অস্বস্তি প্রকাশ করে। আমাদের যেমন নার্ভাস সিস্টেম আছে গাছেরও তেমনই সিস্টেম কাজ করে। গাছে পেরেক মারা কেবল আইনের ব্যত্যয় নয় এটা গাছকে ধ্বংস করার একটি প্রচেষ্টা। গাছে পেরেক ঠুকার ফলে ওই গাছের আয়ু কমে যায়। ফলে গাছটি দ্রুত সময়ে মারা যায়। সব থেকে চিন্তার বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় গাছ নিধনের এমন প্রকাশ্য চেষ্টা চলছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা দ্রুতই এগুলো সরানোর ব্যবস্থা করব।