বিশেষ সাক্ষাৎকার: মাইকেল কুগেলম্যান
(ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অ লে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পর রাশিয়াও জড়িয়ে পড়েছে এই ভূরাজনীতির চক্রে। প্রতিযোগিতায় লিপ্ত এই চার দেশের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশের। এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সামনে চ্যালেঞ্জ এবং ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক নিয়ে মাইকেল কুগেলম্যান কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। তিনি ওয়াশিংটনভিত্তিক নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক। ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিস মিলনায়তনে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের ফাঁকে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদক রাহীদ এজাজ। দৈনিক প্রথম আলো অন লাইনের সৌজন্যে সাক্ষাৎকারটি পত্রস্থ করা হলো।- বার্তা সম্পাদক)
উইলসন সেন্টারে আপনি দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে গবেষণা করছেন। কিন্তু এবারই আপনি প্রথম বাংলাদেশে এলেন। বাংলাদেশে আসার উদ্দেশ্য কী ছিল? প্রথম ঢাকা সফরের পর বাংলাদেশ নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
মাইকেল কুগেলম্যান: বাংলাদেশে আমার প্রথম সফরটা চমৎকার হয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এখানে এমন একটি বিষয়, যা প্রতিদিন এখানকার রাজনৈতিক পরিসরের পাশাপাশি জীবনের নানা স্তরে উচ্চারিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ আজও এখানে যেভাবে অনেকের চেতনায় জুড়ে আছে, সেটা দেখে আমি অবাক হয়েছি। এর বাইরে যে বিষয়টি আমাকে চমকে দিয়েছে তা হলো নির্বাচন। লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, নির্বাচন নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট সমালোচনামুখর। অন্যদিকে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ যুগপৎভাবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন, ভারত-চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়াÍএই তিন ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বৃত্তে আটকা পড়েছে। সব মিলিয়ে সময়টা বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক।
আপনি ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা বলছেন। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অ লে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার আবহে ভৌগোলিক অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভারত-চীনের সঙ্গে সম্পর্কের নিরিখে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মাইকেল কুগেলম্যান: এই অ লে বিশেষ করে বাংলাদেশকে ঘিরে বৃহৎ শক্তিগুলোর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বিবেচনায় নিলে বড় দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ‘ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক’-এর পররাষ্ট্রনীতি পরীক্ষার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে প্রতিযোগিতা যত তীব্র হয়ে উঠছে, পরিস্থিতি ততই জটিল হয়ে পড়ছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিযোগিতা দেখতে পাচ্ছি। আবার ভারতের সঙ্গে চীনের প্রতিযোগিতা অনেক বেশি মাত্রায় তীব্র। অন্যদিকে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার প্রতিযোগিতা অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে গেছে। একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত চারটি দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ফলে চার দেশের এই প্রতিযোগিতা অবধারিতভাবে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ভারসাম্যমূলক নীতিকে পরীক্ষার সামনে ফেলেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একই পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কীভাবে এগিয়ে যায়, সেটাই আমাদের দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া যাক। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ২০০৯ সাল থেকে যথেষ্ট গভীর ও বিস্তৃত হয়েছে। এত জোরদার সম্পর্কের পরেও সরকারি দলের নেতারা প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন। র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের জন্য নতুন মার্কিন ভিসা নীতির প্রেক্ষাপটে এই সম্পর্ককে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মাইকেল কুগেলম্যান: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের দিকে তাকালে তিনটি দিক আমরা দেখতে পাইÍভূরাজনীতি, মূল্যবোধ ও বাণিজ্য। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের শীর্ষ গন্তব্য হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের সম্পর্ককে বাণিজ্য সহযোগিতার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সম্পর্কের মধ্যে আমরা ঊর্ধ্বগতি দেখতে পাই। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পরিষদ গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে উচ্চপর্যায়ের মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সফর করেছে। কাজেই খোলা চোখে সম্পর্কের এই নানা স্তরকে পরস্পরবিরোধী মনে হতেই পারে।
ব্যবসার ধারাটি নিজের গতিতে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। অন্য কোথাও কী হচ্ছে, তা এখানে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক সহায়তার দিক থেকে চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ আছে।
এটা ঠিক যে গণতন্ত্রের জন্য চাপ সম্পর্কের শক্তিমত্তার দিকটিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্র যদি গণতন্ত্রের বিষয়ে চাপ দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে বাংলাদেশ ভাবতে পারে যে তাকে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে। তখন বাংলাদেশের আরও বেশি চীনের দিকে হেলে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে বিবেচনায় নিয়ে এই পরিস্থিতিতে ভূমিকা রাখতে পারে ভারত। চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ভারত নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র কেন গণতন্ত্রের বিষয়ে বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে চলেছে, তা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি। তবে আমি মনে করি, গণতন্ত্রের জন্য চাপ এবং ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিÍএ বিষয় দুটির মধ্যে একটি দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক রয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য চাপ ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্কের সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আপনি চীনের প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা বললেন। সেটাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে চীনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের জন্য বাড়তি চাপ দেওয়াটা কি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে?
মাইকেল কুগেলম্যান: পুরো অ লজুড়ে মার্কিন নীতির অংশ হিসেবেই বিষয়টি ঘটছে। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা লক্ষ করছি। মার্কিন প্রশাসন দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশে যে বার্তা দিচ্ছে, তা খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশের কাছে চীনের বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেটা অবকাঠামো উন্নয়ন, উন্নয়ন, সমরাস্ত্রÍযেটাই হোক না কেন। লক্ষ করলেই দেখবেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে চাইছে। যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দিচ্ছে যে তারা আরও ভালো চুক্তি, আরও ভালো সরঞ্জাম, আরও ভালো প্রযুক্তি দিতে পারবে। ঢাকা এতে বিশ্বাস রাখবে কি না, তা আমি জানি না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এটাই বলার চেষ্টা করে যাচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের আমরা বলতে শুনেছি যে তাঁরা চান বাংলাদেশ যতটা সম্ভব সেরা প্রতিরক্ষা চুক্তিই করুক। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মনে করে, তারা যেসব চুক্তি করে, সেগুলোই সেরা।
কেউ একে পরোক্ষ চাপ হিসেবে তুলে ধরতে পারে। তবে আমি একে চাপ হিসেবে দেখছি না। বিষয়টিকে আমি বাংলাদেশের সামনে চীনের বিকল্প হিসেবে নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের তুলে ধরার চেষ্টা হিসেবে দেখছি। এই বিকল্প তুলে ধরার উদ্দেশ্যই হচ্ছে চীনের কাছ থেকে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও দূরে সরিয়ে নেওয়া।
কিন্তু আপনি কি মনে করেন যে ভিসা নীতির মতো পদক্ষেপ বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে? নাকি এটি উল্টো দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করেছে?
মাইকেল কুগেলম্যান: গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশকে চাপ দেওয়ার কারণে আমরা দুই দেশের সম্পর্কে একধরনের টানাপোড়েন দেখছি। মার্কিন কর্মকর্তারা যখন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের সাফল্য দেখতে চান, তখন তাঁরা কৌশলগত সম্পর্ককে বুঝিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ কিন্তু ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান বা অস্ট্রেলিয়া নয়।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জোটসঙ্গী নয়। তাই খোলামেলাভাবেই বলতে চাই, বাংলাদেশের সরকারকে বিচ্ছিন্ন করার মতো সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে। গণতন্ত্রের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে যেতে চায়। এই অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে সফল হবে বলেই তারা মনে করছে। আমার মনে হয়, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নীতির ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। তাদের এই চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে, এটা জেনেও যুক্তরাষ্ট্র ঝুঁকিটা নিয়েছে। তবে তারা ব্যর্থ হতে চায় না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, সরকারকে সংকটে ফেলার মতো সামর্থ্য তাদের আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেই কূটনৈতিক ক্ষেত্রটি আছে। যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পারছে, সরকারকে সংকটে ফেলার সময় ভারত পাশে না–ও থাকতে পারে।
বাংলাদেশকে বেশি চাপ দিলে দেশটির চীনের দিকে হেলে পড়ার কৌশলগত ঝুঁকি তো যুক্তরাষ্ট্রের আছে। তবে আমি এটাও মনে করি যে বাংলাদেশ যাতে সে পথে চলে না যায়, সে ক্ষেত্রে ভারত ভূমিকা রাখবে। ফলে সেদিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে কিছুটা সুরক্ষিত ভাবছে। তবে ভারত অবশ্যই সেই অবস্থানে থাকতে চায় না। তাই গণতন্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে, ভারত সেটা পছন্দ করছে না।
তাহলে কি আপনি বলতে চাইছেন প্রতিনিয়ত অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়টিকে জনসমক্ষে নিয়ে আসায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের পথে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে?
মাইকেল কুগেলম্যান: সম্পর্কের সরকারি দিকটিকে বিবেচনায় নিলে আমি সেটাই মনে করি। আমার ধারণা, বাংলাদেশের জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশÍযাঁরা বর্তমান সরকারকে সমর্থন করেন না, তাঁরা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যা ঘটছে তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন। কেউ কেউ যুক্তি দিতে পারেন যে এতে করে জনকূটনীতিতে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের অনেকেই বিশেষ করে যাঁরা ক্ষমতাসীন দলকে সমর্থন করেন, তাঁরা এসব ঘটনাপ্রবাহকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না। সরকার যে বিষয়টিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না, সেটা তো খুবই স্পষ্ট। আমি বুঝতে পারছি যে ১৯৭১ সালের মার্কিন নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিছু ক্ষোভ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক চাপ ও সমালোচনা সেই অনুভূতিকে উসকে দিচ্ছে। এটি তাঁকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল।
চীনও কিন্তু ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল।
মাইকেল কুগেলম্যান: সেটা ঠিক। তবে চীন কোনো প্রশ্ন করে না। চীন বাংলাদেশের কোনো কিছু নিয়ে সমালোচনা করে না। যুক্তরাষ্ট্র যত চাপ দেবে, বাংলাদেশও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাল্টা জবাব দেবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সংসদে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অভিযোগ করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের চাপের উত্তরে বাংলাদেশ এটাই বলেছে। এটি আবার ওয়াশিংটন ভালোভাবে গ্রহণ করছে না। দুপক্ষের এমন নীতি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য সুখকর নয়।
সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে যে দুর্নীতি বাইডেন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র কি অর্থ পাচার বা দুর্নীতির মতো বিষয়গুলোকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামনে আনতে পারে?
মাইকেল কুগেলম্যান: ঢাকা সফরের সময় কয়েক দিনের আলোচনায় শুনতে পেয়েছি, নির্বাচনের আগে অর্থ পাচারের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাড়তি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। আমার কাছে বিষয়টি কৌতূহলোদ্দীপক বলে মনে হয়েছে।
আমি মনে করি, গণতন্ত্রের বিকাশের পাশাপাশি দুর্নীতি দমনের বিষয়টিও একইভাবে সামনে থাকবে। মনে রাখতে হবে, ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের (আইপিএস) প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি দমন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আপনি যদি একটি অবাধ, উন্মুক্ত ও নিয়মতান্ত্রিক ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অ ল দেখতে চান, তাহলে নিশ্চয় আপনি এখানে কোনো দুর্নীতি মেনে নেবেন না। তবে সাম্প্রতিক ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী ধাক্কার বিষয়ে আমি যথেষ্ট সচেতন নই। এমন হতে পারে কি না কিংবা সম্প্রতি এ রকম কিছু হয়েছে কি না, আমি তা জানি না।
আপনাকে ধন্যবাদ।
মাইকেল কুগেলম্যান: আপনাকেও ধন্যবাদ।