তিনি কথা বলেন, নিজের পরিচয় দেন না। কারো দেয়া খাবারও নেন না। কাছে গেলেই তাড়িয়ে দেন। গত সাতদিন ধরে বাজারের একটি বন্দ দোকানের সামনে রাস্তার পাশে অনাহারেই পড়ে থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও বাজারের এক ব্যবসায়ী অঞ্জাত পরিচয় এই নারীকে(৪০) উদ্ধার করে কালিয়া হাসপাতারে ভর্তি করেছেন। অনাহারে এখন তিনি চলাফেরার সামর্থ হারিয়ে ফেলেছেন। অনাহারে মৃত্যুর পথযাত্রী এই নারীকে তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কালিয়া উপজেলার পেড়লী মহসিনের মোড় নামক একটি গ্রাম্য বাজারে রহস্যজনক ভাবে তিনি অনাহারেই কাটিয়ে দিয়েছেন দিন-রাত্রি। রহস্যময় এই নারী এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। তবে তার স্বজনদের সন্ধ্যান মেলেনি। বাজারের ব্যবসায়ী আলবাব শেখসহ অনেকেই বলেছেন, গত এক সপ্তাহ আগে বিকালের দিকে তিনি এই নারীকে রুফাজ ভূইয়ার বন্দ দোকানের সামনে বসে থাকতে দেখেন। সন্ধ্যার পরও তাকে একই স্থানে থাকতে দেখে তিনিসহ অনেকেই তার নাম ঠিকানা বা পরিচয় জানার চেষ্টা করলে তিনি তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। কেউ কেউ খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করলে তা তিনি নেননি। পরদিন সকালে তারা বাজারে গিয়ে এই নারীকে শুয়ে থাকতে দেখেন। গত ৭ দিন ধরে তিনি অনাহারে শুয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, তার স্বজনদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে অবস্থার বিবরন দিয়ে অনেকেই ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলেও স্বজনদের কোন সাড়া মেলেনি। অবশেষে তিনি ও পেড়লী ইউপির গ্রাম পুলিশ মো. রাসেল শেখ তাকে কালিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। মো. রাসেল শেখ বলেছেন, চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে রাতেই তিনি ওই নারীর কাছে যান এবং আলবাব শেখসহ অন্যদের সহয়োগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। একজন অসহায় মানুষের সেবা করতে পেরে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। উপজেলার পেড়লী ইউপির চেয়ারম্যান জার্জিদ মোল্যা বলেছেন, তিনি ঘটনাটি গত বুধবার রাতে জানতে পেরে গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। কালিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. তাজ মল্লিক বলেছেন, দীর্ঘ অনাহারের কারনে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কালিয়ার ইউএনও রুনু সাহা বলেছেন, তিনি ঘটনাটি জানতে পেরেছেন। ওই নারীর চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।