প্রকাশ্যেই উৎকোচ গ্রহণ ও লেনদেনের আলাপ চলে ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত বাগধনিয়া ভূমি অফিসে। সরকারী অফিস হওয়ার পরেও সেখানে রেকর্ডরুমে কাজ করছেন বাইরের লোকজন। এমনই দৃশ্য দেখা গেছে সরেজমিনে গিয়ে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাগধনিয়া ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণ, হয়রানী ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে আসছিলেন ভূক্তভোগীরা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিদিন শত লোকের ভীরে রয়েছে দালাল চক্র। অফিসে মৌখিকভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাইরের প্রায় ৪ থেকে ৫ জন যুবককে। যাদের মাধ্যমে নগদ ও বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে আদায় করা হয় অবৈধ অর্থ। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে আদায় করা এসব অর্থ। ভাগ-বাটোয়ারা চলে নিজেদের মধ্যে। সূত্র জানায়, বাগধনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের রয়েছে একাধিক মোবাইল নম্বর। এসব নম্বরে প্রায় প্রতিদিনই চলে আসে মোটা অংকের উৎকোচ। সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মৌখিকভাবে তার সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৪/৫ জন বহিরাগতকে। তারা ভূমি অফিসটির রেকর্ডরুম ও ষ্পর্শকাতর কাগজ-পত্র নিয়ন্ত্রণ করেন। সেবাগ্রহীতাদের সাথে পরচা উঠানো, খাজনা দেওয়া, রেকর্ডে গড়মিল করা, ভূয়া পর্চা তৈরী করাসহ এ ধরনের নানাবিধ কাজ করে থাকেন এই বহিরাগতরা। ভূমি অফিসটিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা থাকলেও একটি কক্ষে ক্যামেরা নেই। সেই কক্ষে বহিরাগতরা অফিসের স্টাফ পরিচয় দিয়ে ভূমি অফিসের কাজ সমাধা করে থাকেন। আর এই কক্ষেই চলে অবৈধ অর্থ লেনদেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী অনেকেই জানান, জমি সংক্রান্ত কাজের জন্য বাগধনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে টাকা ছাড়া তারা কোন কথা বলেন না। এখানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়। প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রের জন্য এক প্রকার বাধ্য হয়েই টাকা গুনতে হয় এই অফিসে। নইলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। সূত্র জানায়, সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ কথায় কথায় বলেন যে, আমার বাড়ি গোপালগঞ্জ। তিনি তার টেবিলে বসে প্রকাশ্যেই অর্থনৈতিক লেনদেন ও এ সংক্রান্ত আলাপ করে থাকেন। তিনি উর্ধতন কর্মকর্তাদের দিয়ে ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ সমাধা করে দেয়ার কথা বলেও মোটা অংকের লেনদেন করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানায়। ভুক্তভোগীরা জানান, বাগধনিয়া ভূমি অফিসের সরকারী নিয়োগ প্রাপ্ত ও মৌখিক নিয়োগে কর্মরত সকলে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটিকে দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অফিসের সকলের নামে-বেনামে রয়েছে একাধিক ব্যাংক একাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা ও অগাধ সম্পত্তি। দির্ঘদিন এই অফিস, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে অনুুসন্ধান করে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঢাকার সাভারের বাগধনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, এই অফিসে মোট ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। বাকি লোকগুলো কারা তার সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি তিনি।