সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:১১ অপরাহ্ন

বিদায়ের সময় হামাস সদস্যকে লিফশিৎজ বললেন সালাম

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩
স্বামীর সাথে ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ - ফাইল ছবি

গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময় ইসরাইলি নাগরিক ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ কাছে থাকা এক সদস্যকে ‘সালাম’ জানিয়েছেন। কাতার ও মিসরের মধ্যস্ততায় সোমবার রাতে হামাস সদস্যরা দুই ইসরাইলি নাগরিককে মুক্তি দেয়।
হামাস তাদের টেলিগ্রাম পেইজে মুক্তি প্রদান নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে। এতে দেখা যায়, লিফশিৎজকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) দুই সদস্যের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। তারাই বন্দী দুজনকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজা থেকে বের করে আনে।
ভিডিওতে দেখা যায়, হামাসের লোগো-সংবলিত বুলেট প্রুফ জামা পরিহিত লম্বা বন্দুকধারী এক ব্যক্তি লিফশিৎজকে আইসিআরসির সাদা গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গাড়িতে প্রবেশ করার আগে তিনি তার হাতটি বাড়িয়ে দেন ওই হামাস সদস্যের দিকে। তারপর বলেন, ‘সালাম।’
লিফশিৎজ পরে ওয়াইনেটকে তার বন্দী হওয়ার সময়ের বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, কিবুজ থেকে তাকে বন্দী করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের সাথে পুরোপুরি প্রশিক্ষিত আচরণ করেছে। আমি যাতে না পড়ে যাই, সেজন্য তারা আমাকে একটি মটরসাইকেলের পাশে স্থান দেয়, একজন ছিল সামনে, আরেকজন ছিল পেছনে। তারা সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে গাজা উপত্যকায় নিয়ে যায়। প্রথমে তারা কাছের আবাসন আল-কাবিরা শহরে রাখে। এরপর আমাকে কোথায় নেয়া হয়, তা জানি না।’ হামাসের প্রকাশ করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের তারা কফি ও মিষ্টি উপহার দিচ্ছেন।
হামাসের হাতে অন্তত ২২২ জন বন্দী রয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে বন্দী করা হয়। এদিকে হামাসের সাবেক নেতা খালিদ মেশাল স্কাই নিউজকে বলেছেন, ইসরাইল গাজায় হামলা বন্ধ করলে তারা সব বেসামরিক বন্দীকে মুক্তি দেবে। তিনি আরো জানান, গাজায় ইসরাইলি হামলায় ২২ বন্দী নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, ইসরাইলের কারাগারগুলোতে আটক ছয় হাজার বন্দীকে মুক্তি দিলেই কেবল তাদের হাতে আটক যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। গত সোমবার রাতে যে দুই বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, তারা ইসরাইলের নাগরিক এবং বয়স্ক। মূলত স্বাস্থ্যগত কারণে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। তাদের নাম যথাক্রমে নুরিত কুপার (৮০) ও ইয়োচেভেদ লিফশিটজ (৮৫)। রাফাহ ক্রসিং দিয়ে তাদেরকে প্রথমে মিসরে নেয়া হয়। সেখান থেকে বিমানযোগে তাদেরকে তেল আবিবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা সুস্থ আছে বলেই মনে হচ্ছে। তারা পরিবারের সাথে মিলিত হয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বন্দীদের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, যুক্তরাষ্ট্র ‘হামাসের দুই ইসরাইলি নাগরিককে মুক্তিদানকে স্বাগত জানায়। আমরা গাজায় আটক বাকি সব বন্দীর মুক্তি নিশ্চিত করতে সবকিছু করব।’ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, দুই ইসরাইলি নারীকে মুক্তি প্রদান করায় যুক্তরাষ্ট্র ‘খুবই সন্তুষ্ট।’

তিনি এমএসএনবিসিকে সোমবার বলেন, ‘এই দুই বন্দীকে (ইসরাইলি নাগরিক) মুক্তিতে আমরা নিশ্চিতভাবেই খুবই সন্তুষ্ট। ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার পর থেকে দুই আমেরিকান নাগরিকের মুক্তির পর এই মুক্তি মিলেছে।’ হামাস বন্দী মুক্তি অব্যাহত রাখলেও ইসরাইল তাদের হামলা বন্ধ করেনি। বরং তারা হামলা আরো জোরদার করেছে। হামাস গত শুক্রবার জুডিথ রানান এবং তার মেয়ে নাতালি রানান নামে দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছিল। কাতার এতে মধ্যস্ততা করেছিল। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে ‘কয়েক দিনের টানা যোগাযোগের পর’ তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়। হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা এর আগে বলেছিলেন, হামাস জুডিথ ও নাতালির সাথে আরো দুই বন্দীকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইসরাইল তাদের গ্রহণ করেনি। তবে ইসরাইল একে ‘মিথ্যা প্রপাগান্ডা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com