মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

৩ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে সরকার পতনের ডাক দেওয়া হবে দিল্লির ভয় দেখিয়ে দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবেনা-লক্ষ্মীপুরে চরমোনাই পীর

গোলাম রাব্বানী (রামগতি) লক্ষ্মীপুর :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৩

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বাংলাদেশে আজ করুন অবস্থা চলছে। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে রাজনৈতিক সংকট ততই বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশকে মানুষের দেশ বলা যায় না। দেশ আজ জাহান্নামের চেয়েও খারাপের দিকে দাবিত হচ্ছে। দেশে রাজনৈতিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। যারা দিনের ভোট রাতে করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করছে না, তাদেরকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করছে। প্রশাসনকে বলছি এই দেশ আমার আপনার সবার। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। আ.লীগের কর্মকর্তা নন। তাই আ.লীগের বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী কোন আদেশ মানবেননা। দেশ ও জনগনের পক্ষে আপনাদের অবস্থান থাকতে হবে। অনেক ত্যাগ ও কুরবানির মাধ্যমে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এদেশ নিয়ে কাউকে চিনি মিনি খেলতে দেওয়া হবেনা। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে চরমোনাই পীর বলেন,দিল্লী আছে তো আমরা আছি বলে যে বক্তব্য আপনি দিয়েছেন। এতে আপনি দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করছেন। সরকার দেশে উন্নয়নের কথা বললেও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ভয় পায় কেন? বাংলাদেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে উন্নয়ন হয়েছে ,সরকারের বাবার টাকা দিয়ে উন্নয়ন হয়নি। এ অবস্থায় আমরা বসে থাকলে চলবে না। সংবিধান দেশের জনগণের জন্য। কিন্তু আ.লীগ বার বার ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংবিধানকে তচনচ করে দিয়েছে। আ.লীগে যারা ঔদ্ধত্য বক্তব্য রাখেন তাদের কথায় মনে হয় দেশ একমাত্র শুধু তাদের। কিন্তু এই দেশ পীর আউলিয়ার। এ দেশ কারো একার নয়! আ.লীগের সাথে সন্ত্রাসী ছাড়া কোনো জনগণ নেই। আগামী নির্বাচন আপনাদের অধীনে নয়, জাতীয় সরকারের অধীনে হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু ছেড়ে বসে থাকবেন বলছেন কেন? তিনি কি ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেননি? তবে তিনি একথা বলেন কেন? সরকার যদি ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ না করে আবারো ক্ষমতায় থাকতে চান,তাহলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আগামী ৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আগামী দিনে হাতপাখাকে ক্ষমতায় আনতে পাড়া-মহল্লায় জনগণকে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে চলতি সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন, পি.আর পদ্ধতির প্রবর্তন ও নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে শনিবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার আয়োজনে কমলনগর উপজেলার তোরাবগন্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি অনারারী (অবঃ) ক্যাপ্টেন মুহাম্মাদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দলের উপদেষ্টা ও চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা খলিলুর রহমান,যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মানসুর আহমদ সাকী,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম রিয়াদ, লক্ষ্মীপুর জেলা সেক্রেটারী মাওলানা মহিউদ্দিন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা জহির উদ্দীন, যুব আন্দোলনের কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুজ্জাহের আরিফী, কমলনগর উপজেলা সভাপতি মুফতী শরীফুল ইসলাম, রামগতি উপজেলা সভাপতি মুফতী হারুনুর রশীদ প্রমুখ। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ভোটের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে মাঠে নেমেছি। ১৪ ও ১৮ সালে প্রহসন ও ডাকাতের নির্বাচন ছিল। এবার প্রহসনের নির্বাচন করতে দেওয়া হবেনা। উন্নয়নের নামে তারা মেঘা চুরি ও ডাকাতি করেছে। বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আ.লীগ দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করছে। আ.লীগকে আর লুটপাটের সুযোগ দেওয়া হবেনা। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। যদি ফিলিস্তিনিরা অধিকার আদায়ের জন্য বুলেটের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, তবে অধিকার আদায় করার জন্য আমরাও ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছি। যখন আন্দোলনের আহ্বান আসবে, তখনি আমাদের আন্দোলনের ময়দানে নামতে হবে। এখন আর বিশ্রামের কোনো সময় নেই। বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে চরমোনাই পীর বলেন, আজ আমেরিকা, রাশিয়া, চীন ও ভারত আমাদের দেশের রাজনৈতিক কর্মকা-ের উপর হস্তক্ষেপ করছে কেন?। এর জন্য আ.লীগকে জবাবদিহি করতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের উপর বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না! চরমোনাই পীর আরও বলেন, দিল্লীর ভয় দেখিয়ে দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। এই সরকারের পতন না ঘটানো পর্যন্ত ময়দান ছাড়া যাবেনা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পেটনীতি করে না। তারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। মানুষের জীবন আজ চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ছাত্ররা যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে,তখন ছাত্রলীগ দুর্নীতি ও লুটপাট করে অর্থ পাচার করছে।
মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে না দিলে এই সরকারের উন্নয়ন মানুষ গ্রহণ করবে না। অন্যান্য দেশে উন্নয়নে যে টাকা ব্যয় হয় শেখ হাসিনার আমলে ৩-৪ গুণ টাকা বেশী ব্যয় হচ্ছে। এই টাকা কোথায় কিভাবে ব্যয় হয়েছে তা জনগণ জানতে চায়। দেশের প্রত্যেকটি টাকার হিসাব শেখ হাসিনাকে দিতে হবে। লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরে মেঘনানদীর অব্যাহত ভাঙন রোধে সরকার কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় তীব্র সমালোচনা করে চরমোনাই পীর বলেন, নদী বাঁধের নামে ৩ হাজার ১শ কোটি টাকা লুটপাটের পাঁয়তারা চলছে। অবিলম্বে মেঘনার ভাঙন থেকে রামগতি-কমলনগরকে রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো সময়ে বিস্ফোরণ ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষ অবৈধ সরকার ও অবৈধ সংসদ দেখতে চায় না। জনগন জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। পীর সাহেব চরমোনাই সরকারকে নিরাপদে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ফর্মুলা দিয়েছেন। এই ফর্মুলা গ্রহন করলে সরকারের জন্য ভাল হবে। জনসভা শেষে একই উপজেলার হাজিরহাট সরকারি মিল্লাত একাডেমির মাঠে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি আয়োজিত বিশাল ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com