সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন

সালাতে উদাসীনতার পরিণাম

আবরার নাঈম:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩

ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সালাত। কুরআনের ৮২ জায়গায় সালাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে- সালাত তরককারী সম্পর্কে কঠিন হুঁশিয়ারি আবার কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে সালাতের প্রতি যত্নশীলদের প্রসংশা ও পুরস্কার। সালাত হচ্ছে ঈমান ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। হাদিসে রাসূল সা: ইরশাদ করেন, বুরায়দা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আমাদের এবং কাফিরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো সালাত। যে সালাত ছেড়ে দিলো সে কুফরি করল।’ (সুনানে নাসায়ি-৪৬৩) অন্য হাদিসে হজরত জাবির রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেছেন, ‘কুফর ও ঈমানের মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত।’ (তিরমিজি-২৬১৮)
সালাত তরককারীরা সাকার নামক জাহান্নামে যাবে। কিয়ামত দিবসে বিচারকার্য সমাপ্ত হওয়ার পর নেককাররা জান্নাতে আর অপরাধীরা জাহান্নামে চলে যাবে। তখন জান্নাতিদের একে অপরকে অথবা ফেরেশতাদেরকে অপরাধীদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। তারা অপরাধীরা কোথায়? তাদের দেখছি না যে। পরবর্তী সময়ে জান্নাতিরা জানবে যে, তারা তাদের পাপের কারণে জাহান্নামে নিপতিত হয়েছে। জান্নাতিদের প্রশ্ন, কোন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে প্রবেশ করাল? জাহান্নামিদের জবাব ‘আমরা সালাত পড়তাম না।’ (সূরা মুদ্দাসসির : ৪২-৪৩)
আমরা অনেকেই সালাত পড়ি। অমনোযোগ, অলসতা ও গাফিলতির সাথে। দেহ মসজিদে অন্তর বাইরে। ফলে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ার পরও নানান অপরাধে লিপ্ত হই। কথা বা কাজে মানুষকে কষ্ট দিই। পরের হক আত্মসাৎ করি। মোট কথা, সালাত আমাদের কোনো ধরনের পাপ থেকে বিরত রাখে না। অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীলতা ও মন্দকাজে বাধা প্রদান করে।’ (সূরা আন কাবুত-৪৫) সালাত যেহেতু পাপকাজ থেকে আমাদেরকে বিরত রাখতে পারছে না তাই প্রশ্ন হতে পারে- কুরআন কি অসত্য? উত্তর হলো- না। আল্লাহর কথা কি কখনো মিথ্যা হতে পারে। তাহলে নিশ্চিত ধরে নিতে হবে, আল্লাহ তায়ালা যেভাবে সালাত পড়তে বলেছেন আমাদের সালাতটিই সেভাবে হচ্ছে না। কারণ যারা অলসতা ও গাফিলতির সাথে সালাত পড়ে তাদের সম্পর্কে কুরআনে এসেছে কঠিন ধমকি ও হুঁশিয়ারি। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘অতএব দুর্ভোগ সেই সালাতিদের জন্য যারা নিজেদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন।’ (সূরা মাঊন : ৪-৫)
আর যারা নিজেদের সালাতের প্রতি যত্নবান, যারা সালাতকে মনে করে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং সেই অনুযায়ী সালাত পড়ে তারাই প্রকৃতপক্ষে সফলকাম। তাদের সফলতার সার্টিফিকেট আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই সফলকাম হয়েছে মুু’মিনরা। যারা নিজেদের সালাতে বিনয়াবনত।’ (সূরা মু’মিনুন : ১-২) দ্বিতীয় আয়াতে খুশুর অর্থ হলো- কারো সামনে ভয়-ভীতির কারণে স্থির ও বিনীত হওয়া। এ জন্যই ইবনে আব্বাস রা: খুশুর তাফসির করেছেন খায়িফুন ও সাকিনুন শব্দ দিয়ে। অর্থ হলো- ভীত ও স্থির। অর্থাৎ আল্লাহর তায়ালার সামনে সম্পূর্ণ বিনয় ও একাগ্রতার সাথে দাঁড়ানো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সালাতের প্রতি যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com