আল্লাহ তায়ালা নারীদের অপূর্ব মাধুর্যের ছোঁয়া দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তার চলাফেরা-কাজকর্মে রয়েছে সুতীব্র কোমলতা। নারী যদি চায় নতুন কাউকে ভূমিষ্ঠও করতে পারে, আবার চাইলে ধ্বংসও করতে পারে। নারীদের বুকে থাকে ভালোবাসার নীলপদ্ম। পার্থিব জীবনের সবচেয়ে মধুরতম অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী। নারী হলো রোজ তাহাজ্জুদে চেয়ে পাওয়া অর্ধাঙ্গিনী! কারো কারো জন্য সৌভাগ্য। নারীর গর্ভ থেকেই হয়েছে পৃথিবীর অগণিত নবী-রাসূল ও মুজাহিদদের প্রথম আশ্রয়স্থল। যার প্রেরণার উৎস থেকে যুগে যুগে কত উৎসাহের শক্তি আর ধিক্কারের ক্রোধ বুকে নিয়েই পুরুষ করেছে বিশ্বজয়। কত নারীর কারণেই বিলীন হয়েছে শত শত পরাশক্তি, ধুলোয় মিশেছে কত স্বপ্নের প্রাসাদ। পথের ভিখারি হয়েছে শাহী রাজবংশ। নারী চাইলে পৃথিবীতে আগুনও জ্বালাতে পারে, চাইলে ফুলও ফোটাতে পারে পুষ্পোদ্যানে। আবার কখনো সর্বহারা যাযাবর পুরুষকেও ধনাঢ্যে পরিণত করতে পারে। নারীর এত সুখ্যাতি ও কৃতিত্ব তখনই তার পদচুম্বন করবে, যখন সে আল্লাহর আনুগত্যের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হবে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভসহ পর্দার বিধানকে আঁকড়ে ধরা হবে তার একমাত্র কর্তব্য। একজন মুসলিম নারী মাত্রই পর্দাপ্রথা পালনের ক্ষেত্রে তার অসম্ভব আগ্রহ ও ব্যাকুলতা থাকতে হবে।
পর্দাই নারীর মর্যাদা, সম্মান ও সম্ভ্রমের রক্ষাকবচ। পর্দার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা ও মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (সূরা আহযাব : ৫৯)।
ইসলাম নারীকে পরাধীনতার অন্ধকার ও দাসত্বের নাগপাশ থেকে মুক্ত করে তার নিজস্ব গণ্ডিতে দিয়েছে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা। ইসলামে কন্যা, বধূ ও মা হিসেবে নারীকে সম্মান-মর্যাদার উচ্চ আসনে সমাসীন করা হয়েছে। নারীকে পরাধীন করা হয়নি, করা হয়নি কারো দয়া-দাক্ষিণ্যের মুখাপেক্ষী। বরং তার প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দেয়ার জন্য পুরুষদের প্রতি কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বর্তমান সমাজের নারীরা ইসলামের যাবতীয় বিধানকে জলাঞ্জলি দিয়ে পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পশ্চিমাদের অনুকরণে অভিশপ্ত পাশ্চাত্য সংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবল নারীদের পৌঁছে দিচ্ছে ধ্বংসের চূড়ান্ত শিখায়। আর নারীদের পর্দাহীনতাই সমাজে ঘটাচ্ছে জঘন্যতম অপরাধ, ইভটিজিং, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ নানান পাপাচার। তথাকথিত আধুনিকতা ও উন্নতির প্রলোভনে সব নোংরা সংস্কৃতি নারীদের ধর্ম পালনের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পর্দাকে সম্মানকারী কোনো নারীই এসব নির্মম পরিস্থিতির শিকার হন না। এটা তার জন্য আল্লাহর বিধানের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ও ভক্তির বহিঃপ্রকাশ।
লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া, বসিলা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা