শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই। প্রায় প্রতিদিনই দাম কমার তালিকায় নাম লেখাচ্ছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকেরও পতন হচ্ছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানর শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন কমে পাঁচশ কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান আছে, দাম কমার তালিকায় আছে প্রায় দ্বিগুণ। এতে কমেছে প্রধান মূল্যসূচকও। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস বাজারটিতে দরপতন হলো। তবে অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসই’র প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে এরপরই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা হওয়ার আগেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য এরপর কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়। কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে আবার দরপতন হয়। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে কমে মূল্যসূচক। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির। আর ১৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫১৬ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে তিন কার্যদিবস পর ডিএসইতে পাঁচশ কোটি টাকার কম লেনদেন হলো।
টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইয়াকিন পলিমারের ২১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, দেশবন্ধু পলিমার, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, বিচ হ্যাচারি এবং খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।