সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ অপরাহ্ন

সংকট কাটাতে বিরোধী দলগুলোকে এক জায়গায় এসে দাঁড়ানোর বিকল্প

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩
অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ও গবেষক জিয়া হাসান

‘ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’র ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনদের অভিমত 
যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবার সম্ভাবনা নেই। তাই সংকট কাটাতে বিরোধী দলগুলোকে এক জায়গায় এসে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই ‘ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’র ওয়েবিনারে অভিমত প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনরা। একতরফা নির্বাচন হলে বৈষম্য বাড়বে এবং বাংলাদেশ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অন্য কোনো দেশের কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে। চলমান সংকট সমাধানে বিদেশিরা সহযোগিতা করতে পারে। তবে দেশের ভেতর থেকেই সমাধান বের করতে হবে। গত মঙ্গলবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের এক ওয়েবিনারে এ অভিমত দেন বিশিষ্টজন। ‘আরেকটি একতরফা নির্বাচন ও সম্ভাব্য পরিণতি’ শীর্ষক ওয়েবিনার স ালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলতে থাকলে বিদেশি রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পায়। তখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে কোনো না কোনো দেশের কাছে জিম্মি হয়ে পড়তে হবে। চীনের ওপর কম্বোডিয়া এবং রাশিয়ার ওপর বেলারুশের এমন নির্ভরতা রয়েছে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশও সেই দিকে এগিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন হলে বৈধতার সংকট ও সুবিধাভোগী তৈরি হয়। অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়। এতে ভুক্তভোগী হয় সাধারণ মানুষ। নয়াদিল্লি, বেইজিং, ব্রাসেলস বা ওয়াশিংটন সংকট সমাধানে সহযোগিতা করতে পারে। তবে সমাধান ঢাকায় হতে হবে। কিন্তু ঢাকায় যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবার সম্ভাবনা নেই। সংকটও কাটবে না। বিরোধী দলগুলোকে এক জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে।’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন বেশির ভাগ সময় প্রশ্নবিদ্ধ। তারা নিজে থেকে তপশিল দিয়েছে কিনা– প্রশ্ন রয়েছে। চারপাশে আচরণবিধি ভাঙা হলেও কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই। মুখোশধারীরা লোকজনকে তুলে নিয়ে হত্যা করছে। এটা ভয়াবহ পরিস্থিতি। এমন অবস্থাতেও একতরফা নির্বাচন হলে এর নিয়ন্ত্রণ যে কার হাতে থাকে!’
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতারা কারাগারে। তাঁদের মুক্তি দিয়ে আলোচনা করে একটি অবস্থানে যেতে হবে। নির্বাচনের জন্য সংবিধানের দোহাই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংবিধানে তো এ ধরনের নির্বাচনের কথা বলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় র‌্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়েছে। ভিসা নীতির পর বিরোধী দল রাজনীতি করায় কিছুটা ছাড় পাচ্ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সেটি ভেঙে গেছে। দেশ অনিবার্য খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন হলে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আরও বাড়বে। এ বৈষম্য ২০১৪ সাল থেকেই দ্রুত বাড়ছে।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের পর নির্বাচনী মাঠ আরও অসমতল হয়েছে। রেফারি হিসেবে নির্বাচন কমিশনের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে, তাদের কাজ ক্ষমতাসীনদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। মূলত প দশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সংবিধানকে অস্ত্রে পরিণত করে নির্বাচনী মাঠকে অসমতল করা হয়েছে। ফলে এখানে কী ঘটবে, তা নির্ধারিত। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী– সবখানেই তো সীমাহীন দলীয়করণ করা হয়েছে।’
উন্নয়ন ও অর্থনীতি গবেষক জিয়া হাসান বলেন, ‘দেশের ব্যাংক ও মুদ্রা খাতে অস্থিরতা চলছে। যাদের খুশি করার জন্য গত ১০ বছরে এ সংকট তৈরি করা হয়েছে, তারা আওয়ামী লীগের ভেতরেই আছে। তারা আবারও ক্ষমতায় এলে সংকট থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।’
এদিকে ওয়েবিনারে গত ৭ নভেম্বর তিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সঙ্গে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বৈঠক নিয়ে সমালোচনা করা হয়। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তিন গোয়েন্দাপ্রধান উপযাচিত হয়ে সিইসির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন, আগে কখনও শুনিনি। নির্বাচন কমিশন ওপেন ফোরাম। সেখানে গোপন বৈঠক বলে কিছু হয় না। বৈঠক করলে পুরো কমিশনের সঙ্গে করতে হয়।’ অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘তিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান দেখা করে হয়তো সিইসিকে বলেছেন, কী করতে হবে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com