সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত: আহত ৭৬

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গতকল শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রবিউল হক। তিনি বলেছেন, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব–উত্তর–পূর্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পের মাত্রা উৎপত্তিস্থলে ৫ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এতে কেউ হতাহত হওয়া বা কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর জানা যায়নি।
আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়িতে ৭৬ শ্রমিক হাসপাতালে: ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি পোশাক কারখানার ৭৬ জন পোশাক শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটের সময় সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিরশ্বানি এলাকার আমির শার্টস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার সোলাইমান বাদশা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে ভূমিকম্প চলার সময় মিরশ্বানি এলাকায় অবস্থিত আমির শার্টস লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার তিনতলা এবং চারতলায় থেকে কাজ চলাকালীন অবস্থায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ সময় তড়িঘড়ি করে সবাই নামতে গিয়ে অনেকে আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হন ৭৬ জন পোশাক শ্রমিক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে তাড়াহুড়ো নামার সময় অনেকেই আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। ২০ থেকে ২৫ জন মতো আহত হয়েছেন। তবে এসময় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েও অনেকে হাসপাতালে এন্ট্রি নিয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে আছি।
আতঙ্কে রাস্তায় মানুষ: ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘরবাড়ি, দালানকোঠা কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক মানুষ বাড়ির বাইরে সড়কে বের হয়ে আসেন। তবে এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গতকাল শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, শেরপুর, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা বলে জানিয়েছেন ঢাকা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রবিউল হক। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, রামগঞ্জ উপজেলা থেকে আট কিলোমিটার পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পের সময় বাড়িতেই ছিলেন নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের কারণে হঠাৎ তাঁর চারতলা ভবন কাঁপতে থাকে। এ সময় তিনি ও পরিবারের সদস্যরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁরা বাসার বাইরে এসে সড়কে অবস্থান নেন। তবে ভূমিকম্পে ভবনের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তিনি গ্রামের একটি দোকানে বসেছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তিনি রাস্তায় বের হয়ে আসেন। পাশের পুকুরে দেখতে পান, পানি কাঁপছে। গ্রামের মানুষজন এখন ভূমিকম্প নিয়েই আলোচনা করছেন।
নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে একটি বহুতল ভবনে অবস্থান করছিলেন প্রথম আলোর সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী। তিনি জানান, ভবনের ওপরের তলাগুলোতে কারখানা রয়েছে। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে মানুষের কোলাহল শুরু হয়। কিছু পোশাকশ্রমিককে দেখা যায়, তাঁরা পাগলের মতো ওপরতলা থেকে ভবনের নিচে নামছেন। তাঁরা ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমরা কই দাঁড়ামু ছার, ভিল্লিংনি (বিল্ডিং) ভাইঙ্গা পড়ে!’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি বাইরে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভব করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাননি। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক ছিল। ভূমিকম্পের পর তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো সংবাদ পাননি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com