মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বরিশালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধন শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ ফটিকছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ও অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিশোরগঞ্জে শহীদ পরিবারের জায়গাজমি জবরদখল বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ নিরাপদ সড়ক চাই দাউদকান্দি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা টমেটো চাষে কৃষক ফিরোজের বাজিমাত, ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও দাউদকান্দিতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার তৃতীয় দিনের মতো চলছে সুন্দরবনের আগুন নেভানোর কাজ বাড়ির ভিতর স্বল্প পরিসরে মাছচাষে তিনগুণ লাভে খুশি মাছচাষী শরীয়তপুর সদর উপজেলাকে একটি আধুনিক উন্নত মডেল রূপে গড়ে তুলবো-উজ্জ্বল আকন্দ

ভারতে বিজেপি বনাম কংগ্রেস : কার নিয়ন্ত্রণে কত রাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
সোনীয়া গান্ধী ও নরেন্দ্র মোদী

চারে তিন বিজেপি, এক কংগ্রেস। ভারতে রোববার প্রকাশিত চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের এই ফলাফলকে অবশ্য অন্য নজরেও দেখা যায়- হিন্দি বলয়ে কংগ্রেস শূন্য, বিজেপি শূন্য দক্ষিণে।
ভারতীয় রাজনীতিতে বহুল প্রচলিত এবং প্রমাণিত সত্য প্রবাদ হলো- ‘উত্তরপ্রদেশ যার, দিল্লি তার’। তবে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, গোটা উত্তর ভারতের সমর্থন সাথে নিয়েই কংগ্রেস একদা রাজত্ব করেছে ভারতে। কিন্তু সেসব রাজ্যেই এখন ক্রমে ক্ষমতাহীন হয়ে চলেছে ১৩৭ বছরের প্রাচীন দল। অন্য দিকে, ১৯৮০ সালে জন্ম নেয়া বিজেপি সেই পুরনো পথেই বসেছে দিল্লির মসনদে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই চার রাজ্যের ফল বিজেপিকে ‘বাড়তি অক্সিজেন’ জোগাবে। কারণ, দিল্লির ক্ষমতায় কে যাবে, তার অনেকটাই ঠিক করে দেয় হিন্দি-ভারত।
কংগ্রেস যে একেবারেই নেই তা অবশ্য নয়। গোবলয়ের মধ্যে না পড়লেও হিমাচল প্রদেশ মূলত হিন্দিভাষী রাজ্য। সেখানে এক বছর আগেই পূর্ণশক্তি নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তারা। এ ছাড়া বিহারেও ক্ষমতার সাথে রয়েছে কংগ্রেস। তবে তৃতীয় শরিক হিসেবে। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ১৬০ আসনের মধ্যে কংগ্রেসের মাত্র ১৯। বিজেপির ৭৮।
তবে হিন্দি-ভারতের বাকি রাজ্যে কংগ্রেসের উপস্থিতিটুকুই শুধু রয়েছে। ভারতের সর্ববৃহৎ রাজ্য উত্তরপ্রদেশের ৪০৩ আসনের মধ্যে কংগ্রেসের দুই! ৯০ আসনের হরিয়ানায় কংগ্রেসের হাতে ৩০। এবার হাতছাড়া রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়। এক অর্থে মধ্যপ্রদেশও ‘হাত’ ছাড়া। কারণ, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস সেখানে জিতেছিল। কিন্তু পরে দলবদলের খেলায় ক্ষমতা যায় বিজেপির হাতে। এ বার মধ্যপ্রদেশ সরাসরিই জিতে নিলো বিজেপি। ভোটের ফলাফলের ধারা বলছে, কংগ্রেস পুরোপুরি পর্যুদস্ত হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্যেই।
হিন্দি-ভারতে দুর্বলতার জন্যই কংগ্রেসের লোকসভার আসন কমতে কমতে ৫০-এ গিয়ে ঠেকেছে। পার্লামেন্টে বিরোধী দলের মর্যাদাও নেই। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে হিন্দি-ভারতের তিন রাজ্যের ফল যেমন বিজেপির জন্য উল্লাসের, তেমনই কংগ্রেসের কাছে উদ্বেগের। দক্ষিণে তেলঙ্গানায় কংগ্রেস জিতলেও বিজেপিকে হারিয়ে নয়। সেখানে বিজেপির হারানোর কিছু ছিল না। তবে দক্ষিণের একমাত্র রাজ্য কর্নাটক হারানোর পর তেলেঙ্গানা নির্বাচনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছিল বিজেপি। তাতে আসনসংখ্যা একটু বাড়লেও তা জাদুসংখ্যার ধারেকাছেও যায়নি। বিজেপির মতো না হলেও কংগ্রেসের অবস্থাও দক্ষিণে খুব ভালো নয়। তেলঙ্গানা দখল করে দক্ষিণ ভারতে কংগ্রেস ক্ষমতায় রইল দু’টি রাজ্যে। এর সাথে হিমাচল প্রদেশ জুড়লে গোটা ভারতে কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের সংখ্যা দাঁড়াল তিন। সেখানে এককভাবে বিজেপিশাসিত রাজ্যের সংখ্যা বেড়ে হলো ১২। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখ-, গুজরাত, গোয়া, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের সাথে যুক্ত হলো রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও সিকিমে সরকার পক্ষে রয়েছে বিজেপি। আপ দুই রাজ্য পাঞ্জাব ও দিল্লিতে ক্ষমতায়। বাকি সব দলই একটি করে রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে।
প্রশ্ন হলো, দীর্ঘ সময় ভারতজুড়ে রাজত্ব-করা কংগ্রেসের হিন্দি বলয়ে এই ক্ষয় কেন? পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ইদানীংকালে কংগ্রেসের রাজনীতিতে জাতপাতের হিসেব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজ্যভিত্তিক বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমর্থন থাকলেও হিন্দু ভোটের একাধিপত্য দিন দিন বিজেপির দিকে চলে যাচ্ছে। এখন আবার ‘সনাতনী’ স্লোগান তুলে বিজেপি হিন্দু ভোটের বিভিন্ন ভাগকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করছে। যা মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান বা ছত্তীসগঢ়ের ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে রামমন্দিরে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’-সহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যে রাজ্যে ‘সনাতনী’ হাওয়া তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। সেই পরীক্ষার প্রথম ধাপে কৃতকার্য পদ্মশিবির। কংগ্রেসের আরো একটি ত্রুটি রয়েছে। রাজ্যে রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সাথে জোট গড়ার ক্ষেত্রে ‘দাদাগিরি’ দেখানো। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে কংগ্রেস নিজে বেশি আসন নিয়ে চাহিদামতো আসন দেয়নি জোটসঙ্গীদের। তার ফলও হাতেনাতে পেয়েছে তারা। এর পরে লোকসভা নির্বাচনে জোট গড়তে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল, বিহারে নীতীশের দল কিংবা ঝাড়খ-ে হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খ- মুক্তি মোর্চার ‘দাদাগিরি’ মেনে নিতে হবে কংগ্রেসকে। একই ‘চাপ’ নিতে হবে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুতেও।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com