সিরাজগঞ্জ-৫ বেলকুচি-চৌহালী সংসদীয় আসনে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন। জনপ্রিয়তায় শীর্ষে থাকায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বেলকুচি-চৌহালী উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৫ আসনটিতে আবারো দলীয় পদপ্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুল মমিন মন্ডল। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি-চৌহালী সংসদীয় আসন এলাকায় আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রবীণ,কর্মীবান্দব, জনবান্ধব প্রিয় এই নেতা বিগতবিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময়ে জেল-জুলুম, নিপীড়ন শয্য করে রাজনীতির ময়দানে তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় ভোটের হিসেব-নিকেশ পাল্টে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ আসনটিতে উন্নয়ন কর্মকান্ডে বর্তমান সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুল মমিন মন্ডলের চেয়ে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছে বলেও মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকসহ সাধারন মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করা আবদুল লতিফ বিশ্বাস ছাত্রজীবন থেকে তিনি আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৬৯ সালে ১১ দফা আন্দোলনে ছাত্রাবস্তায় কারাবরন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৭নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছেন। ১৯৭২ বাংলাদেশ তাঁত ক্ষুদ্র শিল্প ও শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৩সালে বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত এবং জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫‘ পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দোলাচালে তিনি গ্রেফতার হন এবং রংপুর মার্শাল কোর্টে তার বিচার হয়। ১৯৮৪ সালে বেলকুচির দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আবারও কারাবরন করেন। জেলহাজত থেকে পুনরায় তিনি ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করে দ্বিতীয়বারের মতো দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশগ্রহন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই সময়ে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক এবং পরবর্তীতে সাধারন সম্পাদক এবং ২০০২ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও স্বল্প ব্যবধানে হেরে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ থেকে পুনরায় মনোনয় পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও দল থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক এবং ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ৫ বছর সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে আবারও মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও তিনি ২০২২ পুনরায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ণ জমা দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি থাকাবস্থায় বেলকুচি-চৌহালীতে শিক্ষার উন্নয়ন এবং বেকারত্ব দুরি করনে প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে মৎস্য ডিপ্লোমা, ভেটেরিনারী কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ বেলকুচি-সিরাজগঞ্জের একমাত্র সড়কটি দুই-লেনসহ আঞ্চলিক সড়ক নির্মানসহ বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসার উন্নয়ন এবং তৃনমুল নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানোর কারনে তার জনপ্রিয়তা এখনো তুঙ্গে রয়েছেন। আর একারনেই ইতোমধ্যে তার নিজ আসনসহ পুরো জেলায় হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব লতিফ বিশ্বাসকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাধারন ভোটারগন বলছেন, দীর্ঘদিন পর বেলকুচি-চৌহালীবাসী তাদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে পেয়েছেন। বেলকুচি-চৌহালীতে বর্তমান সংসদ আব্দুল মমিন মন্ডল সংসদ সদস্য থেকেও এলাকায় তেমন কোন উন্নয়ন করতে পারেনি। এ দুটি উপজেলায় যতটুকু উন্নয়ন সবই সাবেকমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের হাত ধরেই হয়েছে। তাই এবার লতিফ বিশ্বাসকে ভোট দিতে জনগন মুখিয়ে রয়েছে বলে জানাগেছে। এবং শতভাগ নিরপেক্ষ ভোট হলে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বিপুলভোটে জয়ী হবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দেয়ার পর স্থানীয় তৃনমুল আওয়ামীলীগসহ সাধারন মানুষের ভালবাসা ও অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি। আশা করছি বেলকুচি-চৌহালীবাসী আমাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত করবেন ইনশাআল্লাহ।