ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে দুর্নীতিবাজদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি যেমন বৈষম্য, সামাজিক অনৈক্য এবং অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করে, তেমনি তা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে আজ শনিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ আহ্বান জানান। রাজধানীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি মনে করি, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের গুরুদায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের হলেও এককভাবে কমিশনের পক্ষে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং জনগণের সক্রিয় উদ্যোগই পারে সমাজ থেকে দুর্নীতি নামক বিষবৃক্ষকে নির্মূল করতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” (শূন্য সহনশীলতা) নীতি ধারণ করে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ করে দুর্নীতিবাজদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘কমিশনের সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, অত্যন্ত নির্মোহভাবে, কোনো অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, নিষ্ঠার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন। আপনার কোনো ভুল পদক্ষেপে যেন নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকবেন।’ দুর্নীতি প্রতিরোধে ও দুর্নীতি বিলোপে যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে সক্রিয় অংশগ্রহণ নাগরিক দায়িত্বেরই অংশ বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির বিকাশের কারণে দুর্নীতির ধরন ও পদ্ধতি পাল্টেছে। দুদকের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আপনারা যত দ্রুত সম্ভব নিজস্ব স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন। তাহলে দেশের আদালতগুলোতে চলমান দুর্নীতির মামলাগুলো আরও দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে।’
দুদকের অনুসন্ধান, তদন্ত ও তদারকির কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অনুরোধ থাকবে, আপনারা সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। অনুসন্ধান ও তদন্তকালে আইন দ্বারা অর্পিত দায়িত্ব দৃঢ়তার সঙ্গে পালন করবেন।’ তদন্ত কার্যক্রম তত্ত্বাবধানকারীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অনুরোধ থাকবে, আপনারা প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথভাবে পর্যালোচনা করবেন এবং যতটা সম্ভব নির্ভুল তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করবেন।’