টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলায় পেঁয়াজ চাষ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। উর্বর পলিমাটিযুক্ত জমিতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশায় স্বপ্ন বুনছেন ধনবাড়ী অঞ্চলের কৃষক। ধনবাড়ী বিস্তীর্ণ এলাকায় যেদিকে চোখের দৃষ্টি সীমানায় শুধু দেখা মেলে পেঁয়াজের আবাদ। তবে এবারে পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশী। পেঁয়াজ আমদানি হলে বাজারে দরপতন হবে বলে কৃষকদের আশঙ্কা। এখন বাজারে যে চড়া মূল্য পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এরকমটা হলে কৃষকের ভাগ্য খুলে যাবে বলে ধারণা চাষীদের। ধনবাড়ী উপজেলার ঝিনাই নদীর পানি এবারে আগে নেমে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ আগাম রোপণ করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হওয়ায় দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছেন ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলের কৃষকরা। বাজারে পেঁয়াজের সংকটের কারণে বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় ধনবাড়ী উপজেলার গ্রাম অঞ্চলের কৃষকরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে পেঁয়াজ চাষে বেশি আগ্রহী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই কম থাকায় এবারে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন ধনবাড়ীর কৃষক। ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো। তাই দাম বেশি পাওয়ার প্রত্যাশা চাষিদের। ন্যায্য বাজার মূল্যের নিশ্চয়তা পেলে ধনবাড়ীতে পেঁয়াজ চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, একসময়ের উত্তাল ঝিনাই নদীর জেগে ওঠা চরে আগাম জাতের চাষ করা মূলকাটা পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নদী অঞ্চলের চাষিরা। বিপুল সংখ্যক ভোক্তা চাহিদাসম্পন্ন অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল হওয়ায় পেঁয়াজ চাষ করে ধনবাড়ী উপজেলার কৃষকরা বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। মুশুদ্দি ও কেরামজানি গ্রাম এলাকা এবং ধনবাড়ী বাজার ঘুরে দেখা যায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধনবাড়ী উপজেলার এবারও প্রায় ৪০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ৫ হেক্টর আর কয়েকদিন পরেই স্বপ্নের অর্থকরী সোনালী ফসল পেঁয়াজ ঘরে তুলবেন চাষিরা। স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় পেঁয়াজের পরিচর্যা নিয়ে কর্মব্যস্ত তারা। ধনবাড়ী উপজেলার চাষিরা জানান, বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে পেঁয়াজ চাষাবাদ শুরু হয়। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ও জানুয়ারির শুরুতে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে সেগুলো বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। পেঁয়াজ চাষি মুশুদ্দি পূর্ব পাড়া গ্রামের মো: সামাদ হোসেন,ইসমাইল হোসেন লেবু, পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে বলেন, বর্তমান বাজার মূল্য স্থিতিশীল থাকলে লাভবান হবে কৃষক। পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। দাম ভাল থাকলে আগামীতেও চাষিরা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবেন। এতে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদুর রহমান জানান, ধনবাড়ীতে বন্যা-পরবর্তী ফসল হিসেবে ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এবারে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা পোষণ করেন।