অসহায় দুস্থ মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে মানবতার দেয়াল। চলতি মৌসুমে হাড় কাঁপানো শীতে মানবতার দেয়ালের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে হতদরিদ্র মানুষদের। শীত আসছে। শীতের সঙ্গে সমাগত আরও একটি চিরায়ত দৃশ্য। সেটি হলো আনাচকানাচে, উড়ালসেতুর নিচে, ফুটপাতের ওপর অসংখ্য অসহায় মানুষ পরস্পরের উত্তাপ নিয়ে জড়াজড়ি করে নিশিযাপন করবে। গরীব চা শ্রমিক ও অসহায় হতদরিদ্র মানুষ শীতের কষ্ট থেকে এই ভাগ্যহত ‘মনুষ্যশরীরগুলোকে’ রক্ষা করার জন্য গরম কাপড় ও নৈশ আশ্রয়ের ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল। প্রতিবছর এ অবস্থা চলতেই থাকবে এটি সমাজের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিলেও কিছু মহৎ লোক তা মানতে পারেন না। তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সাধ্যমতো এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় তরুণদের মধ্যে এ রকম একটি মহৎ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তরুণেরা ‘মানবতার দেয়াল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম শুরু করেছেন। তাঁরা একটি দেয়াল নির্ধারণ করছেন। দেয়ালের এক পাশে বিত্তবানেরা তাঁদের অপ্রয়োজনীয় জিনিস রেখে যেতে পারবেন। অন্য পাশ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যেতে পারবেন সুবিধাবঞ্চিতরা। শীতের কথা মাথায় রেখে তাঁরা এটি শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এই মহৎ উদ্যোগটি দ্রুত বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। সর্বশেষ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা বাগানে বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ইউপি সদস্য বাবু ধনা বাউরী তার বাগানের নিজ অফিসের সামনে চালু করেছেন‘মানবতার দেয়াল’। ‘ধনা বাউরী বাগানের বিশিষ্টজনদের নিয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। বাবু ধনা বাউরী বলেন, শীতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুসহ নারী-পুরুষেরা ও চা শ্রমিকরা কষ্ট পান। তাঁদের কষ্ট লাঘবে এই ক্ষুদ্র চেষ্টা। আশার কথা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। সারা দেশের পাড়া–মহল্লায় যদি তরুণেরা একটি করে ‘মানবতার দেয়াল’ গড়ে তোলেন, তাহলে শীতে গরিব লোকজনকে ততটা কষ্টে পড়তে হবে না।