শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

বিলুপ্তির পথে কৃষি বন্ধু কাকতাড়ুয়া

রিয়াদ ইসলাম জলঢাকা :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৪

ক্ষেতের ফসল রক্ষায় আদিকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে কৃষকেরা। এর মধ্যে কাকতাড়ুয়া অন্যতম। ফসল রক্ষায় মানুষের আকৃতি দিয়ে ক্ষেতের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় কাকতাড়ুয়া। এতে পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষা পায় ফসল, লাভবান হন কৃষক। এ পদ্ধতিতে পাখিও মারা যায় না, আবার পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা পায়।পশু পাখিকে ভয় দেখানো কাকতাড়ুয়া এখন আর তেমন একটা চোখে না পড়লেও এরকই চিত্র তুলে ধরেছেন নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বালাপাড়া গুচ্ছ গ্রামের দিপু রাম(২২) তিনি ২০ শতক জমিতে বাঁধাকপি  রোপন করেছেন। বাঁধাকপির ক্ষেত পশুপাখির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কাকতাড়ুয়া তৈরি করেছেন।কেননা এটা ব্যবহার করলে পশু-পাখি ভয় পেয়ে ক্ষেতে আসেনা ।কাকতাড়ুয়া ব্যবহার করলে আমরা চিন্তামুক্ত থাকি। এ কাকতাড়ুয়া এক সময় কৃষকের বন্ধু ছিল। বর্তমানে আগের মত এখন আর কাকতাড়ুয়া দেখা যায় না। কাকতাড়ুয়া তৈরির পদ্ধতি বেশ সহজ। বাঁশ, খড়, মাটির হাড়ি, দড়ি, কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় কাকতাড়ুয়া। মাথার আকৃতি দিতে কেউ খড় কিংবা মাটির হাড়ি ব্যাবহার করে। খরের ওপর কাপড় পেঁচিয়ে আবার কেউবা মাটির হাড়ি বসিয়ে হাড়িতে সাদা রঙ বা কয়লা দিয়ে চোখ মুখের ছবি একে দেয়। এরপর শরীর ঢাকতে পুরনো শার্ট, গেঞ্জি কিংবা জিন্স প্যান্ট পরিয়ে ফসলের জমিতে পুঁতে রাখে। যা দেখতে অবিকল মানুষের মতো। পশু পাখিরা একে মানুষ ভেবে ভয় পায়। বাতাসে দোল খায় বলে কাক, শালিক, চড়ুই, ঘুঘুসহ অন্যান্য পশু পাখি মানুষ ভেবে ভয়ে আর ক্ষেতে আসে না। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, দু’একটা ফসলি জমিতে কাকতাড়ুয়ার ব্যবহার দেখা মিললেও অধিকাংশ জমিতে কাকতাড়ুয়া দেখা যায় না। বর্তমানে কাকতাড়ুয়া ব্যবহারে দিন দিন কমে যাচ্ছে, বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক তার ফসলি জমিতে। আগে এত কীটনাশকের ব্যবহার ছিল না। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বাজারে এসেছে, যা ব্যবহারের ফলে পশু-পাখি আসে না, এতে ফসলও ভালো হয়, তাই কাকতাড়ুয়ার ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। স্বাধীনতার-পরবর্তী সময়ে  গ্রাম অঞ্চলে কাকতাড়ুয়ার ব্যাবহার ছিল চোখে পরার মতো। বর্তমানে নতুন নতুন ফসলের জাত উদ্ভাবন ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি আবিষ্কার করার ফলে পরবর্তী সময়ে এই পদ্ধতিগুলো বিলুপ্ত হতে শুরু করেছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com