রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের পূর্ব নাজিরদাহ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মরা তিস্তা নদীর উপরে সেতু না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। বর্ষার সময় ছোট নৌকায় নদী পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে কয়েকবার। দুর্ভোগ লাগবে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। প্রায় ১০ বছর আগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পাঁচ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি করেন বাশেঁর সাঁকো। সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে বাস কাঠ ও অর্থ সংগ্রহ করে মেরামত করে যাতায়াতের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সাঁকোটি অতি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে প্রতিবছরই মেরামত করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এদিকে ২০২১ সালে হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়েনে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যায়ে পাশেই আরেকটি ব্রীজ তৈরীর জন্য ইট সিমেন্টের সিড়ি ও অ্যাঙ্গেল দিয়ে ব্রিজের অবকাঠামো তৈরি করে রেখে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্রিজটির কাজ শেষ না হওয়ায় আগের বাঁশের সাঁকোটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন ব্রিজ না হওয়ার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হারাগাছের চরাঞ্চলের ৫ গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার এ শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভা সহ ৪ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা নদীটি। নৌকা আর বাঁশের সাঁকোই এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা। ভোটের আগে জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্ররুতি দিলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। এ বিষয়ে কথা হলে স্থানীয় মোঃ মোশারাফ হোসেন ও গাজিয়ার রহমান জানান, নদীর ওই পারে ২টি বাজার, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি মাদ্রাসা রয়েছে। সেতু না থাকায় সাধারন মানুষ ও স্কুল পরুয়া শিশুদের যাতায়াতে চরম বিপাকে পরতে হয়। মোঃ খালিলুর রহমান জানান সেতু না থাকায় পার্শবর্তী চিনাতুলি, ঠিকানার হাট, পূর্ব নাজিরদাহ, বল্লভবিষূ, ও গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্থ লক্ষাধিক মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়তে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ গ্রাম গুলোতে আলু, ভুট্রা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদাম, সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয় অথচ পূর্ব নাজিরদাহ ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ হলে অর্ধেক পথ কমে আসবে, সেই সাথে এলাকার কৃষকরা পাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্যে। পূর্ব নাজিরদাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া জানান সেতু না থাকায় স্কুল পরুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করতে হয়। বিদ্যালয়গামী ছাত্র- ছাত্রীরা জানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে যেতে খুব কষ্ট হয়। সবাই বলে নতুন সাঁকো হবে কিন্তু হয় না। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারাগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যার রাজু আহম্মেদ জানান ব্রিজটির ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বাকি কাজ আগামী এক মাসের মধেই শেষ করবো। ইউনিয়ন পরিষদের অর্থ সংকটের কারনে কাজটি সঠিক সময়ে করতে পারি নাই আশা করছি নতুন বছরেই ব্রিজটি উদ্বোধন করতে পারবো। ব্রিজটির কাজ শেষ হলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এর সুফল পাবে।