প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুলের ওপর শুনানি এক সপ্তাহ পিছিয়েছে। ১ থেকে ৭ জানুয়ারি বিএনপির আদালত বর্জন কর্মসূচি চলমান থাকায় বিএনপির আইনজীবীরা জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের সিনিয়র আইনজীবীদের ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে এক সপ্তাহ সময় আবেদন করেন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বে এ দিন ধার্য করেন। হাইকোর্ট বলেন, জামিন শুনানি আগে এত জরুরি ছিল, এখন পেছাতে এসেছেন কেন?
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বে আলমগীরের জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
গত ৩ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় রাখা হয়। ওই দিন হাইকোর্ট বেে বিষয়টি শুনানির জন্য আর্জি জানালে সংশ্লিষ্ট বে ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। ওইদিন শুনানি শেষে তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত।
পরে ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে গিয়ে দ্রুত শুনানির জন্য তারিখ চাইলে আদালত ১৭ ডিসেম্বর সময় দেন। পরে তা পিছিয়ে ৩ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে সংঘর্ষের সময় কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ রমনা থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। দিনভর ডিবি কার্যালয়ে রাখার পর তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রাতে আদালতে তোলা হয়। তার পর থেকেই কারাগারে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল এই মামলাসহ ১১টি মামলায় গ্রেফতার আছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় গত ২২ নভেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদন করলে নি¤œ আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, ওই মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।