নতুন বছর ২০২৪ সালের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। এতে বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। নতুন বছরের তৃতীয় দিন বুধবার (৩ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। লেনদেন এতটাই কমেছে গত বছরের ২৮ মার্চের পর বা নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। সেইসঙ্গে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অবশ্য এরপরও মূল্যসূচকের সামান্য উত্থান হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে বেড়েছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে বছরের প্রথম দুই কার্যদিবস পতনের পর দুই বাজারেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিললো।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের ৮ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর আর একাধিকবার সূচকের উত্থান-পতন হয়। তবে লেনদেনের শেষদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। অবশ্য তারপরও দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯২টির। আর ১৮০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯২ কোটি ১৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫১৬ কোটি ৮৮ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২২৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ২৮ মার্চের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো। এ লেনদেন খরার বাজারে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্টান্ডার্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ১০ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অলিম্পিক এক্সোসরিজ, ওরিয়ন ইনফিউশ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সমরিতা হাসপাতাল।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির এবং ৭৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।