রোমা ছড়িয়েছে মুহূর্তে মুহূর্তে, গোলও হলো পাল্লা দিয়ে, ছেড়ে কথা বলেনি কেউ। নির্ধারিত সময়ে তাই আসেনি সমাধা, ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই নির্ধারিত হয় ভাগ্য, ৮ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বিজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ। পা রাখে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে। একবার আতলেতিকো মাদ্রিদ এগিয়ে যায় তো আরেকবার রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ হয় ৩-৩ সমতায়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ২৫ মিনিটেও আসেনি গোল। যখন মনে হচ্ছিল টাইব্রেকার ভরসা, তখনই অবশ্য জোড়া গোল করে ম্যাচটা নিজেদের করে নেয় লস ব্লাঙ্কোজরা।
বুধবার রাতে রিয়াদের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ও রিয়াল মাদ্রিদ। যেখানে ৫-৩ গোলে আথলেটিকোকে হারিয়েছে রিয়াল। জয়ের জন্য বেশ লড়তে হয়েছে রিয়ালকে। শুরুতেই তাদের পেছনে ফেলে দেয় আথলেটিকো। ম্যাচের ৭ মিনিটে গ্রিজমানের কর্নার থেকে গোল করে লিড এনে দেন এরমোসো। পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল। বাড়িয়ে দেয় আক্রমণের তেজ।
একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষ রক্ষণের পরীক্ষা নিতে থাকেন ভিনিসিউস-রদ্রিগোরা। সমতায় ফিরতে সময়ও লাগেনি বেশি। ২০ মিনিটে লুকা মদ্রিচের কর্নার থেকে দারুণ হেডে সমতা ফেরান রুডিগার।
১০ মিনিট পর লিড নেয় রিয়াল, এবার বল জালে পাঠান ফারল্যান্ড মেন্ডি। তবে স্বস্তি দীর্ঘায়ত হয়নি, ৩৭তম মিনিটে সমতায় ফেরে আথলেটিকো। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ২-২ করেন গ্রিজম্যান। ডি পলের কাছ থেকে বল পেয়ে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। স্কোরবোর্ড তখন ২-২। দ্বিতীয়ার্ধেও খেলা হয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। দু’দলই হাতছাড়া করে বেশ কয়েকটি দারুণ সুযোগ। বাড়তে থাকে হতাশা। ৭৮ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। এগিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে আরো বিপদে ফেলে দেন রিয়াল গোলরক্ষক। হাত ফসকে রুডিগারের গায়ে লেগে বল জড়ায় জালে। তবে ৮৫তম মিনিটে ফের সমতা টানে রিয়াল মাদ্রিদ। খানেক আগে তিনটি বড় আক্রমণ ঠেকিয়ে দিলেও কারভাহালের বুলেট গতির শটের জবাব জানা ছিল না আতলেতিকো গোলরক্ষকের। ম্যাচে ফেরে ৩-৩ সমতা। পরের কিছুক্ষণ যেন ঝড় বয়ে যায় আথলেটিকোর ডিফেন্সের ওপর। প্রতিপক্ষকে ভীষণ চাপে রেখে একটির পর একটি শট নেন রিয়ালের খেলোয়াড়রা। কিন্তু কোনোটিই খুঁজে পায়নি ঠিকানা। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ২৫ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। যখনই মনে হচ্ছিল খেলা গড়াবে টাইব্রেকারে, তখনই ভাগ্যের জোরে এগিয়ে যায় রিয়াল। কারভাহালের ক্রসে হোসেলু ঠিক মতো মাথা ছোঁয়াতে না পারলেও কিন্তু তার পাশে থাকা অ্যাটলেটিকোর সাভিচের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে।
গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে কর্নারের সময় আতলেতিকো গোলরক্ষকও চলে এসেছিলেন রেয়ালের ডি-বক্সে। তাতেও কাজ হয়নি। উল্টা দারুণ গতিতে প্রতি-আক্রমণে ছুটে গিয়ে ব্যবধান আরো বাড়ান ব্রাহিম দিয়াস। ৫-৩ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ, নিশ্চিত করে জয়। আগামী রোববারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের প্রতিপক্ষ জানার অপেক্ষায় রিয়াল। বৃহস্পতিবার বার্সেলোনা ও ওসাসুনার লড়াইয়ে জয়ী দলের বিপক্ষে খেলবে তারা।