জাজিরায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ। প্রায় দুই বছর ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নের গরমবাজার জোড়াব্রিজ খালের উপর নির্মিত সেতুটি। গুরুত্বপূর্ন এই সেতুটি দিয়ে প্রতিদিনই আতঙ্ক আর ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার মধ্যেই চলছে কৃষকের জমির ধান নেয়া, শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে বিদ্যালয়ে। যে কোন সময় ভেঙ্গে ধ্বসে পড়ে প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে । বর্তমানে সেতুটিতে একটি ভ্যান উঠলে আরেকজন মানুষ হেটে যাওয়া যায়না। কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের পারাপারের একমাত্র এই ব্রিজটিও ভেঙে গেছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজটির মাঝে স্লাব ভেঙে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের যেন অন্ত নেই। ব্রিজটির মাঝখানে ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক ও ব্রিজটি দিয়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ এবং বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে সব ধরনের যানবাহনসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বড় যানবাহন চলাচল করতে না পারায় এলাকায় কৃষি পন্য সহ নির্মাণ সামগ্রী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া অটোরিকশা, অটোভ্যান, নসিমন ও মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুর্ভোগ লাঘবের আশ্বাস দিলেও সেতুটির মেরামতের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মুদাচ্ছের মাদবর বলেন, ব্রিজের এ অবস্থা হঠাৎ করে হয়নি। প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর আগে ব্রিজটির মাঝখানে হালকা ফাটল দেখা দেয়। তারপর থেকে বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ব্রিজের এই অবস্থার কারনে স্কুল কলেজে যাতায়াত করা ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য কষ্টকর। মোতাহার ঢালী নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সেতুটি ওপর দিয়ে চলাচলের সময় ভয়ে থাকতে হয়, কখন যেন এটি ভেঙে পড়ে। এমন আশঙ্কা নিয়ে ঐ সেতুর ওপর দিয়ে জেলা-উপজেলা সদরে নিয়মিত চলাচল করছি বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। অটোভ্যান চালক সালাম শেখ, ব্যাবসায়ী আল আমিন মাদবর, কলেজছাত্র সোহাগ সহ অনেকেই জানান, ব্রিজটি প্রায় দুই বছর ধরে মাঝখানে ভেঙে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। এখানে প্রায় প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্রিজের ভাঙা গর্তে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পালেরচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার হাবিব ঢালী বলেন, ব্রিজের বর্তমান অবস্থা খুবই জঘন্য হয়ে পরেছে। মানুষের অভিযোগ শুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুনেছি ব্রিজের টেন্ডার হয়েছে। এখন কাজ শুরু করতে পারলে জনগণ এর ভোগান্তি দূর হত। এ ব্যাপারে পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী খবরপত্রকে বলেন, ব্রিজটি আমার ইউনিয়নের সঙ্গে জাজিরা উপজেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নবাসীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও প্রতিদিন হাজারও মানুষ বাধ্য হয়ে চলাচল করছে। জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী ইমন মোল্লা বলেন, এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই একটি নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।