ফরিদপুর জেলা পুলিশের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুরে জেলার নগরকান্দা থানার অজ্ঞাতনামা ১টি ডাকাতি মামলার মূল রহস্য উদঘাটন সহ ৪জন আসামী গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার সংক্রান্তে উক্ত প্রেস ব্রিফিং বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সাড়ে বেলা বারোটায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, কোতোয়ালি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাসানুজ্জামান, টিআই তুহিন লস্কর। এ সময় ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয় গত ২১ জানুয়ারি তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি ০৩.২৫ মিনিটের সময় গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীপূর্ব থানাধীন মিরাশপাড়া এলাকা হতে ঘটনায় জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ মহসীন কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মহসীন জানায় যে, ডাকাতির ঘটনায় তারা ৬ জন ডাকাতি করার জন্য একটি পিকআপ গাড়ী নিয়ে গাজীপুর জেলার মাওনা বাঘের বাজার এলাকা হতে গত ১৩ জানুয়ারি রাত নয়টার সময় রওনা করে প্রথমে মাদারীপুর জেলার টেকেরহাট পৌছায় এবং সেখান থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানা এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। তাদের পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাঙ্গা চৌরাস্তার মোড় হতে রাজবাড়ী জেলার উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং রাস্তায় বিভিন্ন মুরগীর গাড়ী লক্ষ্য করতে করতে ফরিদপুর রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে পৌছে একটি মুরগীর গাড়ী ভাঙ্গার দিকে আসতে দেখতে পায়। তারা দ্রুত তাদের গাড়ী ঘুরিয়ে মুরগীর গাড়ীর পিছু নেয়। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল নগরকান্দা থানাধীন তালমা (মানিকনগর) ব্রীজের গোড়ায় মহাসড়কের উপর পৌঁছে মুরগীর গাড়ীর সামনে তাদের পিকআপ গাড়ীটি চাপ দিয়ে থামিয়ে দেয় এবং দ্রুত ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়ী থেকে নেমে মুরগীর গাড়ীর দুই পাশের গ্লাস ভেঙ্গে ড্রাইভার ও মুরগীর মালিক দুজনকে টেনে নামায় ও তাদের মারপিট করে মাথায় আঘাত করে। ডাকাতদের মধ্যে মহসীন ও দেলোয়ার মুরগীর গাড়ীতে উঠে এবং মহসিন গাড়ীটি চালিয়ে নিয়ে যায়। অন্যান্য ডাকাত সদস্যরা মুরগীর ব্যবসায়ী মোশারফের কাছে থাকা নগদ ৯,২০০/- টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে তাদের গাড়ীতে উঠে দ্রুত ঢাকায় চলে যায়। ঢাকার কাপ্তান বাজার এলাকায় ১,৭৭,০০০/- টাকা মুরগী বিক্রি করে। পিকআপ গাড়ী দুইটি নিয়ে তারা গাজীপুর চলে যায়। এজাহারে ৮/৯ জন ডাকাত সদস্যদের কথা উল্লেখ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তারা ৬ জনের একটি ডাকাতদল ডাকাতিতে অংশগ্রহন করে। ডাকাতির লুষ্ঠিত মোবাইলটি আশরাফুল এর নিকট বিক্রি করে। মহসীনের দেওয়া তথ্য ও দেখানোমতে আসামী ২ মোঃ আশরাফুল ইসলামকে গত ২২ জানুয়ারি সকাল ০৬.৩০ মিনিটের সময় গ্রেফতার করা হয়। তার নিকট হতে ডাকাতির লুষ্ঠিত ঠরাড় মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ডাকাত মহসীনের দেওয়া তথ্যমতে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানাধীন বাঘের বাজার হতে আসামী ৩ সুজন মাতুব্বর সজল কে একই তারিখ বেলা ১১.৪৫ ঘটিকায় গ্রেফতার করা হয় এবং তার নিকট হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি পিকআপ গাড়ী উদ্ধার করা হয় যার রেজিঃ নং ঢাকা মেট্রো ২৩-২৭৯১। ডাকাত সুজন এর দেওয়া তথ্যমতে আসামী ৪ মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে গত ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২.৩৫ মিনিটের সময় গ্রেফতার করা হয়। তার নিকট হতে ডাকাতির লুন্ঠিত মুরগী বিক্রির ২৬,৫০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়। সকল আসামীদের সঙ্গে নিয়ে বাকী ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গত ২৩ জানুয়ারি রাত ৯ টায় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা শেষে তাদেরকে নিয়ে নগরকান্দা থানায় আসা হয়। ডাকাতির কাজে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত মুরগীর পিকআপ গাড়ী উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।