ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলায় গাজায় যুদ্ধবিরতির নির্দেশ না দেয়ায় বিশ্ব আদালত বা আইসিজের রায়ের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনিরা। প্রায় চার মাস ধরে চলা বোমা বর্ষণ ও স্থল অভিযান বন্ধের নির্দেশ না আসায় ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, এ রায়ে তারা বিধ্বস্ত। তবে তারা বিস্মিত নন। কারণ এ বিশ্ব ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গাজায় রক্তপাত বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছে গাজাবাসী। খবর আল জাজিরা।
সম্প্রতি ইসরায়েলে গণহত্যার চালানোর অভিযোগ এনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজেতে একটি মামলা করে। কিন্তু আদালত অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির আদেশ না দিয়ে ইসরায়েলকে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন মেনে চলার জন্য ও গাজায় আরো মানবিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দেয় । গাজার অনেক বাসিন্দাই দাবি করছেন, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা বিশ্ব বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখেন না। কারণ তারা এখন পর্যন্ত ছিটমহলের রক্তপাত বন্ধ করতে পারেনি। জাতিসংঘের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১৯ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তাদের মধ্যে ৫৪ বছর বয়সী আহমেদ আল-নাফফার বলেন, যদিও আমি আন্তর্জাতিক আদালতের ওপর আস্থা রাখি না, তবে আমি ভেবেছিলাম আন্তর্জাতিক আদালত যুদ্ধের বন্ধের ব্যাপারে রায় দেবে। যুদ্ধবিরতির জন্য পদক্ষেপ না নিয়ে আমাদের ধ্বংস দেখছে সবাই। আমরা সাহায্য বা খাদ্য চাই না। আমরা যুদ্ধের অবসান চাই, গাজায় ফিরে যেতে চাই।’ ছয় সন্তান হারানো এ পিতাও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তিনি বর্তমানে অন্যান্য শতাধিক ফিলিস্তিদের সঙ্গে হাসপাতালের আঙিনায় আশ্রয় নিয়েছেন।
এ মাসের শুরুর দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজেকে গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের জরুরি স্থগিতাদেশ দেয়ার অনুরোধ করে। এটি যুক্তি দিয়েছিল যে “জেনোসাইড কনভেনশনের অধীনে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের আরো গুরুত্ব সহকারে দেখা এবং অপূরণীয় ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতে নয়টি নিষেধাজ্ঞা দাখিল করেছে। তাদের মধ্যে একটি ছিল যা গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদানের সুবিধার্থে এবং বাধা না দেয়ার জন্য ইসরায়েলকে নির্দেশ দেবে।