ভিসা নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে নীতির কোনো পরিবর্তন করেনি যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য শ্রম আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন সোমবার। তার কাছে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি জানতে চান, বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। এ নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষিতে যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেছে তাদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ৩সি ভিসা নীতির অধীনে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের বিষয়ে কি আমি জানতে পারি? মুশফিকের এ প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এই নীতির কোনো আপডেট বা পরিবর্তন সম্পর্কে কিছু জানি না আমি। আমার অনুধাবন হলো, এই নীতি অস্তমিত হয়নি। কারণ, নির্বাচন সবেমাত্র শেষ হয়েছে। জানানোর মতো কোনো আপডেট নেই আমার কাছে।
এ পর্যায়ে মুশফিক তার কাছে জানতে চান- এখনও কি সেই নীতি বিদ্যমান? জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, হ্যাঁ, নীতিতে কোনো পরিবর্তন নেই।
তার কাছে মুশফিক পাল্টা প্রশ্ন করেন। জানতে চান- বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীকে নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশ। আরেকটি আদালতের নির্দেশের মাধ্যমে তার বিদেশ সফরের সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করছে সরকার।
১২৫ জন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সহ ২৪৩ জন বিশ্বনেতার একটি জোট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সিনেটর ডিক ডারবিনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের উভয় পক্ষের ১২ জন সিনেটর তার বিরুদ্ধে সব রকম হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেয়ার বিষয়কে কোন দৃষ্টিতে দেখে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, অন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তোলা উদ্বেগ নিয়ে আমরাও অভিন্ন উদ্বেগ জানাই। সেটা হলো এই মামলাগুলো বাংলাদেশের শ্রম আইনের অপব্যবহারকেই ফুটিয়ে তোলে। এটা হলো ডক্টর ইউনূসকে ভীতি প্রদর্শনের একটি পন্থা। যেহেতু আপিল প্রক্রিয়া চলমান তাই ডক্টর ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আমরা উৎসাহিত করি।
প্রথম পাতা রলডের সাথে সাব হেডিং দিয়ে নীচে যাবে
বিশ্বব্যাপী স্পাইওয়্যার শিল্প নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র:বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের ফলে ভারত ও ইসরাইলের মতো মার্কিন মিত্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জো বাইডেন প্রশাসন সামরিক গ্রেডের স্পাইওয়্যারের বিস্তার রোধে এই প্রথম এত বিস্তৃত পদক্ষেপ নিলো। অভিযোগ রয়েছে, এই স্পাইওয়্যারগুলির অপব্যবহারে যুক্ত রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। সরকারগুলো শত শত রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এর ব্যবহার করেছে। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, স্পাইওয়্যারের এমন ব্যবহারকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সক্ষমতার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখছে বাইডেন প্রশাসন। প্রায় তিন বছর আগে ইসরাইলের এনএসও গ্রুপকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে মার্কিন সরকারের নিজস্ব বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার ব্যবহারও নিষিদ্ধ করে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয় সেসময়। বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার তৈরিতে বিশ্বে সবার থেকে এগিয়ে আছে ইসরাইল। ফলে মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এমন কঠোর অবস্থান দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ক্ষত সৃষ্টি করে।
সোমবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে স্পাইওয়্যারের বিরুদ্ধে এই কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, যেসব দেশ স্পাইওয়্যারের অব্যবহার করে নাগরিকদের নির্বিচারে আটক, জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় জড়িত- সেসব ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতি আরও বলা হয়, বিশেষ করে যারা স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দমনপীড়ন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ সীমিত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত এবং বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার করে নাগরিকদের গোপনীয়তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং ভিন্নমতাবলম্বী হুমকির মুখে ফেলছে তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বলেন, যারা বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের অপব্যবহার করে- সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী এবং অন্যান্যদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে তাদের নির্বিচারে আটক, হয়রানি এবং বেআইনিভাবে নজরদারি করছে, দমন বা ভয় দেখানোর মতো ঘটনায় জড়িত, সেসব ব্যক্তি ও তাদের নিকটবর্তী পরিবারের সদস্যদের এই ভিসানীতির আওতায় তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।