আমাদের চারপাশে এবং এর বাইরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে কে একমাত্র অবহিত? এর উত্তর হলো সর্বশক্তিমান আল্লাহ। পবিত্র কুরআনে তিনি বলেছেন, তিনি পৃথিবীর সব কিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন, তারপর তিনি আকাশের দিকে মনোসংযোগ করেন এবং তাকে (আকাশকে) সপ্তাকাশে বিন্যস্ত করেন, তিনি সব বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। (সূরা আল বাকারা-১৯) আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, পৃথিবীর সব কিছু আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন তা থেকে সাব্যস্ত করা হয়েছে যে, যমিনে সৃষ্ট প্রত্যেক জিনিস মূলত হালাল, যতক্ষণ না কোনো জিনিসের হারাম হওয়ার কথা দলিল দ্বারা প্রমাণিত হবে। (ফাতহুল ক্বাদির) আকাশের দিকে মনোসংযোগ করা প্রসঙ্গে সালাফদের কেউ কেউ এর তর্জমা করেছেন, এরপর আসমানের দিকে আরোহণ করেন। (সহিহ বুখারি) মহান আল্লাহর আসমানের উপর আরশে আরোহণ করা এবং বিশেষ বিশেষ সময়ে নিকটতম আসমানে অবতরণ করা তাঁর গুণবিশেষ। কোনো অপব্যাখ্যা ছাড়াই এর উপর ঐভাবেই ঈমান আনা আমাদের ওপর ওয়াজিব, যেভাবে তা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
সপ্তাকাশের প্রসঙ্গ থেকে প্রথমত, জানা গেল যে, আসমান এক অনুভূত বস্তু এবং বাস্তব জিনিস। কেবল উচ্চতা (মহাশূন্য)-কে আসমান বলে আখ্যায়িত করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, জানা গেল, আসমানের সংখ্যা হলো সাত। আর হাদিস অনুযায়ী দুই আসমানের মধ্যকার দূরত্ব হলো পাঁচ শত বছরের পথ। আর যমিন সম্পর্কে কুরআনে কারিমে এসেছে, ‘এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে’। (সূরা ত্বালাক্ব-১২) এ থেকে যমিনের সংখ্যাও সাত বলে জানা যায়। নবী সা: এর হাদিস দ্বারা এ কথা আরো বলিষ্ঠ হয়। বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে এক বিঘত যমিনও আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমিনকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে। (সহিহ বুখারি ২৯৫৯ নং) ওই আয়াত থেকে এ কথাও জানা গেল যে, আসমানের আগে যমিন সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সূরা নাযিআত (৩০ আয়াতে) আসমানের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যমিনকে এরপর বিস্তৃত করেছেন। এর ব্যাখ্যা এটাই করা হয়েছে যে, প্রথমে যমিনই সৃষ্টি হয়েছে, তবে পরিষ্কার ও সমতল করে বিছানো হলো সৃষ্টি থেকে ভিন্ন ব্যাপার, যেটা আসমান সৃষ্টির পর সম্পাদিত হয়েছে। (ফাতহুল ক্বাদির)