বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদের সভা
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ঈদের আগে গণমাধ্যমকর্মীদের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি জানিয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদের সভায় এ দাবি জানানো হয়।
বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, সহসভাপতি এ কে এম মহসিন ও মুহাম্মদ খায়রুল বাশার; সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম; সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ; দপ্তর সম্পাদক আবু বকর এবং প্রচার সম্পাদক হয়েছেন শাহজাহান সাজু,নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, মোদাব্বের হোসেন, অর্পণা রায়, মুহাম্মদ আবু হানিফ, ম হামিদুল হক মানিক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম,খুরশীদ আলম, মুন্সীগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী বিপ্লব হাসান ও সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। সভার এক প্রস্তাবে দেশে সাংবাদিক নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সভায় গতকাল ফেনিতে সাংবাদিকদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, টপ টেন মার্ট ফেনী আউটলেট উদ্বোধন করতে ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল আসবেন বলে গণমাধ্যমকে দাওয়াত দেয়া হয়। সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্ধারিত সময়ে সাংবাদিকরা সেখানে গেলে টপটেন কর্মীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেন। সাংবাদিকদের সাথে তর্কের এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি জেনারেল ম্যানেজার মাসুদ খানের নেতৃত্বে বিক্রয় প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর, ফেনী শাখার ম্যানেজার জামাল উদ্দিন ও নুরুল আলমসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন টপটেন মার্ট এ কর্মরত কর্মচারী সাংবাদিকদের উপর হামলে পড়ে। তারা সাংবাদিকদের এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। এতে ৭ জন সাংবাদিক আহত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন এম কাওছার রিপোর্টার ফেনীর প্রত্যয়, তালাশ সংবাদ’র ফেনী প্রতিনিধি তানজিদ শুভ, গ্লোবাল টেলিভিশন ফেনী অফিস’র ক্যামেরা পার্সন এনামুল হক বাদশা ,দৈনিক সংবাদ সংযোগ ফেনী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল নোমান ,দৈনিক অন্য আলোর ফেনী প্রতিনিধি সাজ্জাতুল ইসলাম মিরাজ,দৈনিক নয়াপয়গাম’র শহর প্রতিনিধি তাহমিদ ভূইয়া।
সভায় এ সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বলা হয় সাংবাদিক নির্যাতন সরকার, সরকারি দল , সরকারি বাহিনী ও প্রভাবশালীদের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।
সভায় সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী কালাকানুন উল্লেখ করে বলা হয় বিশ্ব ঘৃণিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন নাম দেয়া হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টেও নিবর্তনমূলক উপাদানগুলো রয়েই গেছে। আগের মতোই বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমতের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ‘ব্যাপকভাবে খর্ব’ করার সুযোগ নতুন আইনেও রাখা হয়েছে।
বিশেষ করে এই আইনে পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এখানে পুলিশ কর্মকর্তার ‘মনে করার ওপর’ নির্ভর করতে হচ্ছে। কারণ, পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন, প্রস্তাবিত আইনের অধীনে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তাহলে তিনি বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে গ্রেপ্তারও করতে পারবেন। এটি ভয়ংকর আশঙ্কা তৈরি করছে। ফলে নতুন এই আইনের মাধ্যমেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তর সুযোগ রয়ে গেছে।একই সাথে এ আইনের মাধ্যমে ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে। সভায় সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, আমার দেশ, দিনকাল, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশনসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া, দাবি জানানো হয়।