বরিশালে বাস শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের জেড় হিসাবে রবিবার (৫ মে) সকাল থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ৮ ঘন্টা অভ্যন্তরীণ বরিশাল জেলার ১৭টি রুটের সকল যাত্রীবাহী বাস ও দূর পাল্লার সব ধরণের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে ছিল বিক্ষুদ্ব সাধারন শ্রমিকদের বাধার মুখে।পরবর্তী নথুল্লাবাত শ্রমিক ইউনিয়নের সদ্য নিয়োগকৃর্ত সভাপতি কাজী কবিরের সমর্থকরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে মিছিল করে বাস টারমিনাল এলাকা দখল নেওয়ার জন্য বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস শ্রমিকদের কয়েকদফ পুলিশের উপস্থিতিতে ধাওয়া করে। এসময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক সদস্যদের মারধর করে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এক প্রর্যায়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা হামলাকারীদের ছবি ও ভিডিও ধারনকালে তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে না পেরে তাদের গায়ে হাতও তোলে ও ধারালো অস্ত্র ধারা কোপ দেয়।অন্যদিকে বরিশাল ঢাকা মহা সড়ক নথুল্লাবাদ সড়কে বাস মালিক সভাপতি অসিমের পক্ষে মিছিল করার সময় পুলিশ ধারালো অস্ত্র রাম দা সহ জাহাঙ্গীর ও লিমন নামের ২ ব্যাক্তিকে আটক করে। পরবর্তীতে বরিশাল বাস মালিক গ্রপের সভাপতি অসিম দেওয়ানের সমর্থক কর্মীরা বাসস্টান্ডে এসে পুরাপুরি দখল নিয়ে বন্ধ থাকো বাস চলাচলের ব্যবস্থা করে। এছাড়া নথুল্লাবাত বাস স্টান্ডে সকাল থেকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সহ অতিরিক্ত পুলিশ,ডিবি মোতায়েন করার পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা অবস্থান নেয়। শনিবার (৪ মে) দুপুরে বাস শ্রমিকদের দুই গ্রুপ ও সন্ধ্যায় মাহিন্দ্রা চালকদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষের প্রভাবে টার্মিনাল এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গন্তব্যের যেতে টার্মিনালে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন যাত্রীরা। টার্মিনাল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।অন্যদিকে বিচ্ছিন্নভাবে বরিশালের বাহির থেকে ঝালকাঠি ও পটুয়াখালী জেলা থেকে ছেড়ে আসা কিছু সংখ্যক দূর পাল্লার বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রম করতে দেখা গেছে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশাল বাসস্টান্ড থেকে দুরপাল্লা সহ অভ্যন্তরীন কোন বাস চলাচল করেনি।এদিকে শনিবার দুপুরে ও সন্ধ্যায় দুই দফায় তিন ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ ছিল। উজিরপুরগামী যাত্রী রানা বলেন, সব বাস চলাচল বন্ধ। এ সুযোগে হলুদ অটোরিকশার চালকরা তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে এসে আটকে আছেন বলে জানান তিনি। বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা বলেন, শনিবার বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসিম দেওয়ানের সদস্য ভাবাই কর্তৃক বাস চালক ও হেলপারকে মারধরের ঘটনার জড়িতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাস চলবে না। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছি। টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। এর আগে শনিবার দুপুরে ২ ঘণ্টাব্যাপী শ্রমিকরা দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করায় সারা দেশের সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছে। জড়িতদের বিচার দাবিতে শনিবার সন্ধ্যার দিকে ফের বিক্ষোভ ও ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। দ্বিতীয় দফা বিক্ষোভের এক পর্যায়ে মাহিন্দ্রা চালকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বাস শ্রমিকরা। এ সময় দুই গ্রুপে অন্তত ১৫ শ্রমিক আহত হওয়া ছাড়াও দুই গ্রুপে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত বাস ও মাহিন্দ্রা ভাঙচুর করা হয়। এতে ঘণ্টাখানেক বন্ধ থাকে বাস চলাচল। এ ঘটনায় পুলিশ বলছে, নথুল্লাবাদ টার্মিনাল কেন্দ্রীক পরিবহণ সেক্টরের শ্রমিক নেতাদের মধ্যে দু’টি গ্রুপ বিদ্যমান। তাদের মধ্যে থাকা বিরোধের সূত্র ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে। ফলে টার্মিনালের ভেতরে ও বাইরে সংঘর্ষ-ভাঙচুর, হাতাহাতির ঘটনা ঘটিয়েছে শ্রমিকরা। এব্যাপারে গত ১লা মে বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি করা হয় অসিম দেওয়ানের সদস্য কাজী কবিরকে যা এঘটনা অনেক শ্রমিক মনে প্রানে মেনে নিতে পারার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে শনিবার তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে। এবিষয়ে বাশ শমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির গণমাধ্যমকে বলেন আমরা কোন ধরনের অশান্তি বিশৃঙ্খলা চাই না। এখানে আমাদের লোক কারো উপরে হামলা করে নাই। যা কিছু হয়েছে বাহিরে তারা বহিরাগত তারা আমাদের লোক না বলে দাবী করে।