প্রফেসর ড. আব্দুর রব বলেন, স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচাতে হলে প্রত্যেককে কমপক্ষে একটি করে গাছ রোপণ করতে হবে। পৃথিবী ও প্রকৃতি রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে সর্বমহলকে এগিয়ে আসতে হবে। আল্লাহর সৃষ্টির সংরক্ষণে প্রাকৃতিক নিয়ম মানায় সকলকে বদ্ধপরিকর হতে হবে। ডক্টরস ফর ইকোসলিউশন এর উদ্যোগে গত সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রব। বিশিষ্ট চিকিৎসক এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (কার্ডিওলজি) ডা. মেহেদী হাসান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম, প্যানেল অব এক্সপার্ট ডা. শোয়েব মোমেন মজুমদার, ডা. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ প্রমুখ। প্রধানঅতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আব্দুর রব বলেন, মানুষ পরিবেশ ও এই পৃথিবীর মূল্যবান অঙ্গ। প্রকৃতি ছাড়া মানুষের জীবন অসম্ভব। তাই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের কথাটা জানা খুবই জরুরি। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে পরিবেশ ধ্বংস করা কখনোই কল্যাণকর হবে না। বৃক্ষ নিধনের ফলে প্রকৃতি নাজুক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে বৈশি^ক পরিবর্তনের ফলে এতে গরম আবহাওয়া আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্ম আরও ক্ষতির সম্মুখিন হবে। হিট স্ট্রোকে মৃত্যুসহ নানাভাবে মানুষ দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে পড়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, অবশ্যই পরিবেশের প্রতি ইনসাফ ও প্রাকৃতিক বিধানকে প্রাধান্য দিতে হবে। জলাশয় সমূহকে নিরাপদ করে তুলতে হবে। যার যেখানে অবস্থান তথা বন্যদেরকে বনে থাকতে দিন প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসরণ করুন। রাজধানীসহ সারাদেশে নগরে নগরে সবুজ বনায়ন তৈরি করুন। তবেই সবার জন্য স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথ সূচিত হবে।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গরম আবহাওয়া, জলবায়ুর পরিবর্তন, দূষণ আমাদেরকেই সচেতন থেকে মোকাবেলা করতে হবে। এমতাবস্থায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ ও ভূমিকা পালন করতে হবে। বেশি সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় থাকলে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এই পর্যায়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মস্তিষ্ক, হৃৎপি-, বৃক্ক ও পেশির ক্ষতি হতে পারে। আর মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে তৈরি একধরনের জটিলতার নাম হিট স্ট্রোক। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এটি ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি হলেই হিট স্ট্রোক হতে পারে। এ সমস্যায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হিট স্ট্রোক হলো এমন একটি চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা যার ফলে শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পরাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে এই গরমে একটু সতর্কতার সাথে চললেই আমরা বাঁচতে পারি এই সমস্যা থেকে।
হিট স্ট্রোক হলে আমাদের করণীয় : প্রাথমিকভাবে হিট স্ট্রোকের আগেই যখন হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সোশন দেখা দেয়, তখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আপনার পাশের কোনও ব্যক্তির হিট স্ট্রোক হলে তাকে দ্রুত শীতল কোনও স্থানে নিয়ে যান। ফ্যান বা এসি চালিয়ে দিন। ভেজা কাপড়ে শরীর মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে রোগীর কাঁধে, বগলে ও কুঁচকিতে বরফ দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর চেষ্টা করুন। যদি হিট স্ট্রোক হয়েই যায়, তাহলে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রীষ্মকালে সূর্যের প্রকটতা এমনি বেশি থাকে। পানির ঘাটতি দেখা দেয়। তাই রোদের তীব্র তাপমাত্রায় আমাদের শরীর দেহ থেকে ঘাম বের করতে অক্ষম হয়ে পরতে পারে। সেহেতু আমরা একটু সতর্কতার সাথে চললেই হিট স্ট্রোক থেকে নিজেকে বাঁচাতে সক্ষম হবো। তাই বেশি বেশি পানি ও পানীয় জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেসব খাবার আমাদের শরীরকে অনেকক্ষণ সময় পর্যন্ত ডিহাইড্রেড রাখতে পারবে, সেই সব খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।