ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, এই সপ্তাহে গাজা দক্ষিণী শহর রাফাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে প্রায় ৩ লাখ মানুষ পূর্ব রাফাহ ছেড়েছে। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে ‘সোমবার আদেশ জারি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত, প্রায় ৩ লাখ গাজাবাসী আল-মাওয়াসিতে মানবিক এলাকার দিকে চলে গেছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘ বলেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এক লাখেরও বেশি মানুষ রাফাহ থেকে পালিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর সেটাকে উপযুক্ত নয় বলে প্রত্যাখ্যান করে নেতানিয়াহু সরকার। একই সঙ্গে ইসরায়েল রাফায় বড় ধরনের স্থল অভিযান চালানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার মিশরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং- গাজায় প্রবেশের একমাত্র দখল করে নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এর আগে সোমবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা পোস্টার, ক্ষুদে বার্তা, ফোনকলের মাধ্যমে রাফায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনিদের নির্দিষ্ট এলাকায় চলাচল না করতে উৎসাহিত করছে। একই সঙ্গে রাফাহর পূর্ব অংশে থাকা ফিলিস্তিনিদের অতি শিগগিরই একটি মানবিক এলাকায় চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যা একটি স্থল হামলার আগে বেসামরিক নাগরিকদের স্থানান্তরের সূচনা বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ইসরায়েল রাফাহতে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনার ফলে বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকার শেষ নিরাপদস্থল হিসেবে সেখানে ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন, যা গাজার মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে রাফাহতে হামলা করলে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বুধবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষকে হত্যা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বোমাগুলো ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, ‘যদি তারা রাফাহতে যায়, আমি সেই অস্ত্র সরবরাহ করব না যা রাফাহকে মোকাবেলায় ঐতিহাসিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।’
তবে গতকাল শনিবারও সামরিক বাহিনী পূর্ব রাফাহ এবং উত্তর গাজা উপত্যকার আরও বেশি এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে পূর্ব রাফাতে ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সূত্র: আলজাজিরা