বিশ্বে মানুষের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়ার বা অন্ধত্বের একটি বড় কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ। বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ বা ৪ কোটির বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। আবার তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ জানেনই না, তারা এতে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপ চোখের রেটিনার রক্তনালীগুলোর ক্ষতি করতে পারে।চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলে ‘হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি’।
হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি কী? হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি হলো চোখের রেটিনার ক্ষতি, চোখের পেছনের একটি অংশ যেখানে ছবিটি ফোকাস করে। রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণে রেটিনায় রক্ত স ালনে বাধা পাওয়া।
ঝুঁকিতে যারা: যাদের অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস আছে, তাদের হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
লক্ষণ: ১. দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ২. চোখ ফুলে যাওয়া ৩. মাথাব্যথার সঙ্গে ডাবল দৃষ্টি ৪. রেটিনায় রক্তক্ষরণ।
জটিলতা: চোখের রগ শুকিয়ে যাওয়া: এটি এমন এক অবস্থা, যার ফলে অপর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের কারণে অপটিক নার্ভের ক্ষতির কারণে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। রেটিনার ধমনী অবরোধ: এটি রেটিনায় রক্ত বহনকারী ছোট ধমনিগুলোর একটিতে এমবোলিজম (অবরোধ) দ্বারা সৃষ্ট হয়।
রেটিনার শিরা অবরোধ: এটি ছোট শিরাগুলোর ব্লকেজের কারণে ঘটে। ম্যালিগন্যান্ট হাইপারটেনশন: ম্যালিগন্যান্ট হাইপারটেনশন হলো অত্যধিক উচ্চ রক্তচাপ, যা চোখসহ বেশ কিছু ধরনের অঙ্গের ক্ষতি করে।
চিকিৎসা: ১. জীবনযাত্রার পরিবর্তনের (খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম) মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা। ২. ওষুধ।
প্রতিরোধ: ১. নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া। ২. নিয়মিত ব্যায়াম করা। ৩. সুষম খাদ্য গ্রহণ করা।
৪. ধূমপান এড়িয়ে চলা। ৫. দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করা। ৬. নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা এবং কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
লেখক: ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, কনসালটেন্ট, চক্ষু, দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবাহানবাগ, ঢাকা।