রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে সুখবর মিলছেই না। অব্যাহতভাবে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। আর তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। সরকার কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দিলেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কিছুতেই কমছে না। মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যখন-তখন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ ও ক্ষোভের শেষ নেই। বাজারে ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে গত সপ্তাহেই। পাড়া-মহল্লার দোকানে ৫৫ টাকা হালিও বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এ পণ্যটি কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। বাড়তি আলু-পেঁয়াজের দামও। বাজারে এখন মাছ-মাংসের দামও বেশ চড়া। এসময়ে আমিষের চাহিদা পূরণে ডিমই ভরসা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত তথা সীমিত আয়ের মানুষের। তবে এ পণ্যটির দাম হঠাৎই বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার (২৪ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানী ঢাকায় ডিমের বড় দুটি পাইকারি বাজারের মধ্যে একটি কারওয়ান বাজার সংলগ্ন তেজগাঁও রেলস্টেশন পাইকারি ডিমের বাজার, অন্যটি পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজার। উভয় বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার পাইকারিতে প্রতি ১০০ পিস বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে এক হাজার ১৮০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। প্রান্তিক খামারিরা ডিমের দাম কমা-বাড়া নিয়ে তেজগাঁও আড়ত মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, কিছুদিন আগেই ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়ত মালিকরা। সে সময় সারাদেশে ডিম হিমাগারে মজুত হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারাদেশে ম্যাসেজের মাধ্যমে তারা (তেঁজগাও আড়ত মালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। হুট করে দাম কমিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এরপর আবার দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা লুটে সিন্ডিকেট।
তিনি বলেন, ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও মজুতদাররা সারাদেশে দৈনিক বিক্রিত প্রায় চার কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইলে ফোনে ম্যাসেজ বা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা ম্যাসেজ দিয়ে বাজারদর জানিয়ে দেয় সারাদেশের আড়তদারদের। তারাই এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট। বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। তবে সোনালী মুরগির দাম আগের মতোই ৪০০ টাকা কেজিতে আটকে আছে। যা স্বাভাবিক সময় ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হতো।

গত প্রায় তিন-চার সপ্তাহ ধরে সবজির দামও চড়া। বাজারে এখন প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। কাকরোল, বরবটিরও একই দাম। এমনকি বছরজুড়ে তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া পেঁপের কেজিও এখন ৮০ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে এখন প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনতে ক্রেতাকে গুনতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেশি। এছাড়া আদা বা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকার কমে মিলছে না। আলুর কেজি গত সপ্তাহে ৫০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া গত দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কম থাকায় বাজারে মাছের দামও বেড়েছে। মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. খালেক বলেন, ‘এক মাস আগের চেয়ে প্রত্যেক জাতের মাছ কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ায় আমাদের বেচাকেনাও কমেছে। ব্যবসা করা কঠিন হয়ে গেছে। আড়তে মাছ নাই। যা পাই তা-ও দাম চড়া। বাড়তি দামে কাস্টমাররা মাছ নিচ্ছে না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com