রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন

অসময়ে ভাঙছে তিস্তার পাড়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ জুন, ২০২৪

গত এক সপ্তাহ ধরে অল্প বৃষ্টিতে ক্রমান্বয়ে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে তিস্তায়। এর ফলে অসময়েই আগ্রাসী হয়ে উঠেছে নদীটি। শুরু হয়েছে ভাঙন। গত কয়েকদিনে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী কয়েকটি এলাকার প্রায় ১০ থেকে ১২টি বসত ঘর ও স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি হুমকিতে রয়েছে এই উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাইসহ আশপাশের তিন গ্রামের কয়েকশ বসত ভিটা, স্কুল, মসজিদ রেল ও সড়ক সেতু। গত শনিবার (১ জুন) দুপুরে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তার দক্ষিণ তীরে গত দুই বছর ভাঙতে ভাঙতে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দক্ষিণে সরে এসে ঠেকেছে বাঁধে। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলছে ভাঙন রোধে।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তার পরিবর্তিত গতিপথ এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অচিরেই বিচ্ছিন্ন হবে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে তিনটি গ্রামের অসংখ্য বাড়িঘরও।
গদাই এলাকায় পোশাক শ্রমিক সন্তানদের রোজগারে গড়ে তোলা আধা পাকা বাড়িটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন মজিরন নেছা নামের এক বৃদ্ধা। তিনি জানান, তিস্তা কেড়ে নিয়েছে তার স্বপ্ন ও সহায় সম্বল। সবশেষ পোশাক শ্রমিক সন্তানরা যে আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছে, সেটিও এখন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। বাঁধ রক্ষায় সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে গদাই এলাকার ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিস্তা নদী গত তিন বছরে প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে প্রবেশ করে অসংখ্য বাড়ি ও ফসলি জমি গিলে খেয়েছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে কাউনিয়ার রেলস্টেশন। এই রেলস্টেশনকে তিস্তার কবল থেকে বাঁচাতে দেওয়া হয়েছিল একটি বাঁধ। সেটিও অসময়ের বৃষ্টিতে প্রায় অর্ধেক ভেঙে গেছে। তাই দ্রুত কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি নদী বিশেষজ্ঞদের।
নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানিতে পলি জমে তিস্তার পেট ভরাট হচ্ছে। ফলে এবার তিস্তার আগ্রাসী ভাঙন প্রতিরোধ সহজ হবে না। এই নদীকে নিয়ে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করা না হলে এবারের বন্যায় তিস্তা রুদ্র রূপ ধারণ করতে পারে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এখনই নদীর ভাঙন পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরা লীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, বর্ষার আগেই ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে জিও ব্যাক ফেলার কাজ অব্যাহত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভাঙন এলাকাগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ওই স্থানগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তাদারকি করছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com