চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা একটি ঈমানি দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে না পারায় সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষ তাদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে গরিবের হক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামানা
গতকাল শনিবার এফডিসিতে কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান আরও বলেন, পরিবেশ সুরক্ষার যে লক্ষ্য নিয়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে, পোস্তগোলায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অব্যাহত থাকায় সে লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়নি। এ বছর কোরবানির চামড়া ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট দেখা না গেলেও এর প্রভাব রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। দেশে চামড়ার চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি হওয়ায় এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতি বছর ২০ লাখ চামড়ার চাহিদা থাকলেও চামড়ার জোগান হচ্ছে ২ কোটি। কোরবানির ঈদের সময় ঢাকায় ৪ লক্ষ উদ্বৃত্ত চামড়া থাকে। যা প্রক্রিয়াকরণ সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা যায় না। সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে চামড়ার দামে ক্রমাগত যে ধস নেমেছে তা এখনও পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে ট্যানারি মালিক ও আড়ৎদাররা সিন্ডিকেট করে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছে প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের। চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন সিন্ডিকেট আছে কি না তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা দরকার।
তিনি বলেন, কোরবানির চামড়ার মূল্য গরীব দুঃখী মানুষের হক। সিন্ডিকেট করে যদি কেউ এই হক নষ্টের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। বিষয়টি জাতীয় সংসদে আলোচনার দাবি রাখে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কমনা করছি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ইশরাত শবনম, স্থপতি ফৌজিয়া ভূইয়া ও সাংবাদিক সেলিম মালিক। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।