দায়িত্ব নেয়ার পর মুহূর্ত থেকে কাজ শুরু করেছেন বৃটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার। শুক্রবার ব্যস্ত দিন কাটিয়েছেন তিনি। এদিনই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন মন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছেন। তার মধ্যে বৃটেনের ইতিহাসে প্রথমবার অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন একজন নারীকে। তিনি হলেন র্যাচেল রিভস। পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন ডেভিড ল্যামিকে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলছে, ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে কনজারভেটিভদের উৎখাত করে মধ্য-বাম ধারার লেবার পার্টির সরকার পথচলা শুরু করেছে। নতুন অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস সাবেক শিশু দাবা চ্যাম্পিয়ন এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করাকে প্রথম কাজ বলে উল্লেখ করেছেন। এক্সে লিখেছেন, আমাকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়াটা আমার জীবনের জন্য সম্মানের।
যেসব মেয়ে ও নারী এই লেখা পড়ছেন তাদের সবার জন্য আজকের এই দিনটি দেখিয়ে দিয়েছে- আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষার কোনো সীমা থাকা উচিত নয়। ওদিকে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি গায়েনার একজন অভিবাসী। তিনি বড় হয়েছেন লন্ডনের উত্তরে টটেনহ্যামে। সেখান থেকে ২০০০ সাল থেকে তিনি পার্লামেন্টের প্রতিনিধিত্ব করছেন। লেমির বয়স যখন মাত্র ২৭ বছর তখন তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টের সবচেয়ে কম বয়সী এমপি হন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, গর্ডন ব্রাউনের সরকারে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধে অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতিতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং জিম্মিদের মুক্তি দাবি করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা দেয়ার পরই এ মন্তব্য করেন তিনি। বর্তমানে তার বয়স ৫১ বছর। এই দুটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিরতিহীন কূটনৈতিক উদ্যোগে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন লেমি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তিনি বলেন, আমরা সবাই দেখছি ইসরাইল এবং গাজা থেকে কি দৃশ্য বেরিয়ে আসছে। এ নিয়ে যে ক্ষোভ সে বিষয়ে আমাদের স্বীকার করতে হবে। কিন্তু এখন প্রয়োজন অক্লান্তভাবে কাজ করা।
ওদিকে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে অ্যানজেলা রেনারকে। তিনি গৃহায়ণ, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেখাশোনা করবেন। ৪৪ বছর বয়সী এই নারী মাঝে মধ্যে নিজের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে কথা বলেন। তিনি বলেন, সুযোগ সুবিধা বি ত এক সরকারি বাড়িতে তিনি বড় হয়েছেন। একজন ইয়াং মা হিসেবে অল্প বয়সেই তাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছে। তিনি ট্রেন ইউনিয়ন কর্মকর্তা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। তারপর এমপি হন।
লেবার দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিপরিষদের সাবেক মন্ত্রী ইভেট কুপারকে নিয়োগ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিপরিষদে ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে লিসা নন্দিকে। ডচি অব ল্যাঙ্কাস্টারের চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্যাট ম্যাকফাডেনকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেয়েছেন জন হিলি। আইন মন্ত্রী করা হয়েছে শাবানা মাহমুদকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ওয়েস স্ট্রিটিংকে। শিক্ষামন্ত্রী বানানো হয়েছে ব্রিজেত ফিলিপসনকে। জ্বালানিমন্ত্রী করা হয়েছে এড মিলিব্যান্ডকে। আর হাউস অব কমন্সের নেতা বানানো হয়েছে লুসি পাওয়েলকে।