গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেনের স্বেচ্ছাচারিতায় একযোগে ওই পৌরসভার ৯ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ ১২ জন কাউন্সিলর কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সকল কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত প্যানেল মেয়র মো. আমির হোসেন। প্যানেল মেয়র আমির হোসেন বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস.এম রবীন হোসেনের স্বেচ্ছাচারিতায় আমরা পৌরসভার সকল কাউন্সিলর একযোগে কঠোর অবস্থানে আছি। পৌর মেয়র পৌরসভার সকল কাউন্সিলরদের অগ্রাহ্য করে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও) মোহাম্মদ মিলন, পৌর প্রকৌশলী মন্নুর আহমেদ ও কর নির্ধারক মো. বেলায়েত হোসেন খানকে সাথে নিয়ে সকল কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্য সম্পাদন করেন। কাজ করার আগে কাউন্সিলরদের সাথে কোন মিটিং বা রেজুলেশন তৈরি করেন না। এমনকি পৌর এলাকার কর আদায়সহ সকল আয়-ব্যয়ের ব্যাপারে মেয়রকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি হিসেব দিতে তালবাহানা করেন। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের কঠোর কর্মসূচির অংশ হিসেবে পৌরসভার কাউন্সিলররা এক জোট হয়ে প্রথমে নিজেদের মধ্যে একতার চুক্তি সম্পাদন করে শপথ গ্রহন করি। আর আমাদের এই শপথ করান পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সেলর ও আরেক প্যানেল মেয়র মো. আশরাফুল আলম রিপন। পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মোসা: আমিরুন নেছা বলেন, আমরা (মঙ্গলবার) দুপুরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের গাজীপুরের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. ওয়াহিদ হোসেনের সাথে দেখা করে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এর আগে গতকাল সোমবার একই বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম ইমাম রাজী টুলুর সাথেও সাক্ষাৎ করেছি। প্রথম ধাপে আমাদের এই কর্মসূচি চলমান থাকলেও সামনে আরো কঠোর কর্মসূচির কথাও বলেন ওই প্যানেল মেয়র আমিরুন নেসা। এ পর্যন্ত সকল কর্মসূচিতে এক সাথে ছিলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ, ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মু. আফসার হোসেন, ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আশরাফউজ্জামান, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ বাদল হোসেন, ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস ছালাম, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নুরে আলম শেখ, ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নার্গিস বেগম, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর কান্তা ভূঁইয়াসহ তিন প্যানেল মেয়র। জানা গেছে, পৌরসভা ২০১০ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত হলেও পরে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী পৌর এলাকার সাধারণ মানুষের প্রত্যেক্ষ ভোটে তারা তাদের পৌর পিতা হিসেবে মো. লুৎফর রহমানকে নির্বাচিত করেন। প্রথম নির্বাচনের পর দ্বিতীয় নির্বাচনের সময় সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনী জটিলতার কারণে বেশ কিছু দিন কালক্ষেপন হয়। এরপর ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় পৌর এলাকার মানুষের তাদের পৌরসভার অভিভাবক হিসেবে এস.এম রবীন হোসেনকে নির্বাচিত করেন। পৌরসভায় গিয়ে ছিলাম আপনার সাথে কথা বলতে কিন্তু আপনাকে পাইনি এমন প্রশ্নে জবাবে মুুঠো ফোনে কালীগঞ্জ পৌর মেয়র এস. এম রবীন হোসেন বলেন, আমি বাহিরে ছিলাম। পরে কাউন্সিলরদের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, পৌরসভার সকল কাউন্সিলরদের সাথে দেখা ও কথা হয়েছে। আপাতত কোন সমস্যা নাই। এ ব্যাপারে পরে আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা হবে। ইউএনও এস.এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার সকল কাউন্সিলর একসাথে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য এসেছিল। তবে কাউন্সিলরদের কথা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ডিডিএলজি গাজীপুর মো. ওয়াহিদ হোসেন বলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার সকল কাউন্সিলর একসাথে এসে পৌরসভার বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।