নব যোগদানকৃত গোপালগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ড. আতোয়ার রহমান বলেছেন, মানব দেহের রোগ মুক্তির দায় যেমন একজন ডাক্তারের উপর অর্পিত থাকে, প্রকৌশলী তার ইটের গাঁথুনিতে যেমন অবকাঠামোর ভিত গড়েন, ঠিক তেমনি দুষ্টের দমন ও শিষ্ঠের পালনে বিচারাঙ্গন বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে। মঙ্গলবার সকালে গোপালিগঞ্জ আইনজীবী সমিতির দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বিরোধ নিস্পত্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত রায়ে রূপান্তরিত করতে বিচারক, আইনজীবী, পক্ষ-বিপক্ষ, সাক্ষী একে অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিচার বিভাগের অগ্রযাত্রায় বার ও বেঞ্চ একে অপরের পরিপূরক। বার ছাড়া যেমন বেঞ্চের অস্তিত্ব থাকে না, তেমনি বেঞ্চ ছাড়াও বারের অস্তিত্বও কল্পনাতীত। বলা হয়- এ গুড বার ব্রিগেটস এ গুড বেঞ্চ( অ এঙঙউ ইঅজ ইঊএঊঞঝ অ এঙঙউ ইঊঘঈঐ.) তাই আইনের শাসন ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বার ও বেঞ্চের সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা আবশ্যক। বার ও বেঞ্চের নৈতিক ভিত্তি যাতে ধ্বংস না হয়, সে বিষয়েই আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। এর পাশাপাশি যুক্তিসঙ্গত আনুগত্য পূর্ণ ও সুষম সম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে গোপালগঞ্জকে আমি দেশসেরা বিচার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। এ বিষয়ে আমি আপনাদের সকলের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি। সম্বর্ধিত আইন কমিশনের সাবেক সচিব সদ্য যোগদানকৃত গোপালগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ড. আতোয়ার রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর পূণ্যভূমিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মহান দায়িত্ব পেয়ে আমি গর্বিত উচ্ছসিত। ন্যায় প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোষহীন। তাই নির্যাতন, নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যায়ের দীপ্ত প্রজ্বলন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করাই আমার একান্ত ব্রত। অতীতে সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জ্ঞান পিপাসার অন্যতম খোরাক ছিল আইন। ফলে তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, মননশীল, উন্নত আচরণ, আইন পেশাকে অনেক উঁচুতে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। জয় করেছিল মানুষের হৃদয়। আমরা আমাদের সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করব। তিনি আরো বলেন, সত্য ন্যায়ের পাখা মেলার, ফুল ফোটানোর সকল রঙ্গিন আয়োজন রয়েছে আমাদের এই পবিত্র আইনাঙ্গনে। স্বপ্ন ও আলোর জগতে আনন্দময় পদচারণা ঘটে বিচার প্রার্থীদের। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আঁতুড়ঘড় হলো এই পবিত্র বিচারাঙ্গন। এখানে সত্য ও ন্যায়ের ফুল ফোটানো হয়। বিচারালয় যেন এক পান্থশালা। বিচার সূচনা ও সমাপ্তির মধ্য দিয়ে একদল বিচার প্রার্থীর অনুপ্রবেশ ও আর একদল বিচার প্রার্থীর বিদায়ের মধ্য দিয়ে বয়ে চলে অন্তহীন এ বিচারধারা। বিচার প্রতিষ্ঠায় এই আনন্দ ও বিদায়ের স্বাক্ষর বুকে নিয়ে এই আদালত অন্তহীন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ হায়দার আলী খোন্দকার, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া। গোপালগঞ্জ আইন জীবী সমিতির সভাপতি এম, এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম, জুলকদর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মুন্সি আতিয়ার রহমান, সাবেক সরকারী কৌশূলী (জিপি) চৌধুরী খসরুল আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সুনীল কুমার দাস ও সাধারণ সম্পাদক আজগার আলী খান।