পলিথিনে মুড়ানো ঝুপড়ি ঘর আর মাটির বিছানায় শেষ ভরসা বৃদ্ধা আছিয়া খাতুনের। স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ স্মৃতি নিয়েই বেছে আছেন ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধা। নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আছিয়া খাতুন। ৬৫ বছরের এই নারী স্বামী ও সন্তান নিয়ে একসময় সুখের সংসার ছিল। কি সবকিছু হারিয়ে এখন পলিথিনে মুড়ানো ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই বৃদ্ধা। স্বামী আর ৭ সন্তানের মৃত্যুর পর এখন চলেন মানুষের দয়ায়। সারাদেশের মতো কলমাকান্দা উপজেলায় ঘর দিয়েছেন সরকার। তবে সে ঘর কপালে জুটেনি আছিয়া খাতুনের। তাই সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন স্থনীয় বাসিন্দা ও বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন। সরেজমিনে দেখা যায়, পলিথিনে মুড়ানো ঝুপড়ি ঘরে মাটির বিছানায় শুয়ে আছেন বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন। ঝুপড়ি ঘরে ঢুকতে দেখে ধীরে ধীরে উঠে বসেন তিনি। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা ঠিক মতো কথাও বলতে পারেন না। ঝুপড়ি ঘরের এক পাশে মাটি উচু করে সেখানে তৈরি করেছেন মাটির বিছানা। সেখানেই পার করছেন বছরের পর বছর। স্থনীয়রা বলেন, ৯ সন্তানের জননী আছিয়া খাতুন। এর মধ্যে ৭ ছেলে সন্তান মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে কেউ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহনন করেছেন। আবার কেউ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। এক মেয়েকে দিয়েছেন বিয়ে। আরও এক ছেলে সন্তান পাগল হয়ে ঘুরছেন রাস্তায় রাস্তায়। সবকিছু হারিয়ে আছিয়া খাতুন দিশেহারা। ভিক্ষা করে চলেন এখন তিনি। স্থনীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, আছিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই কষ্টে আছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে কিছু স্বস্তি পাবে। ঝুপড়ি ঘরে ময়লা আবর্জনার সঙ্গে দিন কাটছে তার। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধার খোঁজ নিয়ে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া পরবর্তীতে ঘর আসলে তাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর দেওয়া হবে।