নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে আজিজুল ইসলাম নামে সপ্তম শ্রেনী পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ লোকেদের বিরুদ্ধে। আজিজুল ইসলাম উপজেলার লিয়াকত আলী ভুইয়ার নাতি। সে রায়পুরার সেরাজনগর এমএ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া হত্যার প্রধান আসামী আবিদ হাসান রুবেল ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, রবিবার (১১ আগষ্ট) সকালে আজিজুল সেরাজনগর স্কুলে আসার পর আবিদ হাসান রুবেলের ছেলে আরিয়ান, রেজাউল করিম টুটুলের ছেলে আবির হোসেন, সাকিব, লিটনের ছেলে নাসির ও হাছেন আলীর ছেলে রোমান মিয়া সহ আরও কয়েকজন মিলে হামলা চালায়। তারা আজিজুলকে মারার জন্য স্কুলের পিছনের গেইট দিয়ে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে স্কুলের ৩য় তলা ভবনে উঠে যায়। এর আগেও গত বুধবার তারা আজিজুলের উপর হামলা চালায় বলে জানান ভুক্তভোগীর স্বজনরা। গত ২২ মে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া চরাঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে তার উপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল। ওইদিন হামলার শিকার হয়ে রাতে হাসপাতালে সুমনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই আবিদ হাসান রুবেল ও লিয়াকত আলী গ্রুপের মধ্যে পূর্ববিরোধটি পুণরায় সামনে আসে। সুমনের মৃত্যুর পর রুবেল সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা এলাকা ছাড়া হয়। দীর্ঘ ১ মাস এলাকা ছাড়া থাকার পর গত ২২ জুন পুণরায় এলাকায় এসে লিয়াকত আলী গোষ্টির লোকেদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় রুবেল বাহিনী। এরপর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সদস্যরা কাজ করতে থাকেন। ওই হামলায় আহত হয় বেশ কয়েকজন। রুবেলকে ধরতে পুলিশী অভিযান শুরু হলেও আশ্চর্যজনক ভাবে সে ধরাছোয়ার বাইরেই থাকে সবসময়। এরপর আরও একাধিকবার লিয়াকত আলীর গোষ্টির উপর অতর্কিতভাবে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় রুবেল সমর্থকরা। এনিয়ে থানায় একাধিকবার অভিযোগ, জিডি, মামলাও হয়েছে। এগুলা ছাড়াও রুবেলের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় হত্যা, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ব্যাপারে ১০ টি মামলা রয়েছে। সবশেষ শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর আবিদ হাসান রুবেল বাহিনীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। পুলিশী কার্যক্রম স্থগিত থাকার সুযোগে তারা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে হামলা চালায় লেয়াকত আলীর লোকদের উপর। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় স্কুলে। এরপর খবর পেয়ে দ্রত ঘটনাস্থল পৌছায় রায়পুরায় দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর একটি দল এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার। স্কুলে হামলার বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় ইউএনও ইকবাল হাসান।