শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::

হৃদয়কে গুলি করে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায় পুলিশ, ভিডিও ভাইরাল

মো. সেলিম হোসেন, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ৫ই আগষ্ট বিকালে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে সাধারণ মানুষের সাথে বিজয় মিছিলে অংশ নেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র হৃদয় (২০)। তারপর থেকে নিখোঁজ সে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও আজো তার সন্ধান মেলেনি। হৃদয় গোপালপুর উপজেলার আলমনগর মধ্যপাড়ার কৃষক লাল মিয়া ও রেহেনা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ঔদিন বিকালে কাশিমপুর রোডের শরীফ জেনারেল হাসপাতাল (প্রা:) লিঃ এর গেইট সংলগ্ন স্থানে ১০-১২জন পুলিশ একজনকে ঘেরাও করে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করে। পরে তার দেহ চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায়।
হৃদয়ের পরিবারের দাবি, পরনের পোশাক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্নণামতে নিশ্চিত হয়েছি যে, গুলিবিদ্ধ ছেলেটি ছিল আমাদের হৃদয়। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির পরও আজো তার সন্ধান মেলেনি। হৃদয় ২০২২সালে এসএসসি পাসের পর হেমনগর ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি দারিদ্র্যতার কারনে সে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অটো রিকশা চালিয়ে উপার্জন করতো। তার বড় দু’বোন রয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। এলাকাতেও নেমেছে শোকের মাতম।
হৃদয়ের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা দু’জন এক রুম ভাড়া নিয়ে থাকতাম। মিছিলে গুলির ঘটনায় আমি কোনাবাড়ি মেট্রো থানা সংলগ্ন একটি বাসায় আশ্রয় নেই। সেখান থেকে দেখতে পাই ৪জন পুলিশ গুলিবিদ্ধ একজনকে চ্যাংদোলা করে থানার সামনে নিয়ে একটি টেবিলের আড়ালে লুকিয়ে রাখে। গুলিবিদ্ধ লোককে দেখতে হৃদয়ের মত মনে হলেও পুলিশের গুলির ভয়ে তখন কাছে যেতে পারিনি। পরে শুনি রাত ৩টায় সব পুলিশ থানা থেকে চলে গেছে। এরপর বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে হৃদয়ের পরনের লুঙ্গি পেয়েছি।
আলমনগর ইউপির সাবেক সদস্য আঃ হামিদ বলেন, ঐ ঘটনার একটু দূরেই আমার দোকান রয়েছে। গুলির ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের বর্ণনায় নিশ্চিত হয়েছি ওটাই হৃদয়।
অটোরিকশা গ্যারেজ মালিক হাফিজুর রহমান তপন মুঠোফোনে জানান, হৃদয় মিছিলে ছিলোনা। আমার গ্যারেজ থেকে বাসায় ফেরার সময় পুলিশের ধাওয়ায় দুই বিল্ডিং এর মাঝে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সেখান থেকে ধরে এনে গুলির ঘটনা ঘটায়। পরে আমার গ্যারেজের সামনে দিয়ে তাকে টেনে নিয়ে যায়। অনেকেই মোবাইলে সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করেন।
এদিকে ভিডিও দেখে হৃদয়ের বাবা, মা ও বোন চিৎকার করে হৃদয়কে জীবিত বা মৃত খুঁজে এনে দেওয়ার অনুরোধ জানান। মৃত হলে তাকে শহিদের মর্যাদা এবং খুনীদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com